প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্ত জানতে পেরে হাসপাতাল থেকে পালালেন এক ব্যক্তি। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে বনগাঁর সুন্দরপুর ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। পরে পঞ্চায়েত এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের সহযোগিতায় তাঁকে খুঁজে বের করেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকের ট্যাংরা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর ওই ব্যক্তি সোমবার সকালে সামান্য সর্দি নিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন। চিকিৎসক তাঁকে দেখে করোনা হয়েছে বলে সন্দেহ করেন। হাসপাতালেই তাঁর র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়। আধঘণ্টার মধ্যে রিপোর্টে জানা যায়, তিনি করোনা আক্রাম্ত। তাঁকে সে কথা জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলা হয়।
কিছুক্ষণ পরে খোঁজ করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখেন, ওই ব্যক্তি উধাও। হাসপাতাল চত্বর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। চিন্তায় পড়ে যান ব্লক স্বাস্থ্য দফতর কর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে। করোনা পরীক্ষার আগে ওই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখে রেখেছিলেন। সেই মতো স্বাস্থ্যকর্মীদের খোঁজ শুরু করতে বলা হয়। খোঁজাখুঁজির পরে জানা যায়, তিনি বাড়িতেই লুকিয়ে রয়েছেন।
বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি ভেবেছিলেন, তাঁকে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হবে। এই ভয় থেকেই তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। আপাতত তাঁকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাঁর কোনও উপসর্গ নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর দেখভাল করছেন।’’
করোনা নিয়ে ভীতির কারণেই এই ঘটনা বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলেই মত তাঁদের। এক আধিকারিক জানান, পজ়িটিভ রিপোর্ট এলে কোভিড হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকা, পরিবারের উপর সামাজিক চাপ— এ সব ভাবনা থেকে অনেকেই উপসর্গ নিয়েও করোনা পরীক্ষা করাতে চাইছেন না। এই পরিস্থিতিতে করোনা সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন করার প্রয়োজন রয়েছে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
এ দিকে, বনগাঁ ব্লক এলাকায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘সোমবার ব্লকে নতুন করে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩২ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৬ জন। বাকিরা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকের মধ্যে সব থেকে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন গাঁড়াপোতা পঞ্চায়েত এলাকায়। সোমবার ওই এলাকায় যান বিএমওএইচ। তাঁর কথায়, ‘‘গাঁড়াপোতা এলাকায় করোনায় প্রকোপ ছড়ালেও মানুষ সচেতন নন। বেশিরভাগ মানুষই মাস্ক পড়ছেন না। বাজারহাট, দোকানে মানুষ শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে চলছেন না। মানুষ সচেতন না হলে করোনার সংক্রমণ কমানো সম্ভব নয়।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy