Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

সামাজিক অনুষ্ঠানে জমায়েত হয়েই পাত পেড়ে চলল খাওয়া

দূরত্ব বজায় না রেখেই বসেছেন সবাই। নিজস্ব চিত্র

দূরত্ব বজায় না রেখেই বসেছেন সবাই। নিজস্ব চিত্র

নবেন্দু ঘোষ 
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৫:২৮
Share: Save:

করোনা-সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্বের নিদান দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জমায়েত এড়াতে জনতা কার্ফুর আবেদন ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তুা তাতেও যেন হুঁশ ফিরছে না সাধারণ মানুষের। সামাজিক অনুষ্ঠানে রীতিমতো পাত পেড়ে খাওয়ানোও চলছে। কোনওরকম সতর্কতা না মেনেই। এমনকি, পঞ্চয়েত সদস্যের বারণও শোনেনি ওই পরিবার।

রবিবার হাসনাবাদের বিশপুর গ্রামের একটি শ্রাদ্ধের নিয়মভঙ্গ অনুষ্ঠান চলল জাঁকজমক করেই। যদিও সব নিমন্ত্রিতেরা আসেননি বলেই পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে। তার পরেও এ দিন ২০০ আমন্ত্রিত পাত পেড়ে খেয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সামাজিকতার খাতিরেই তাঁরা এমন আয়োজন করেছেন বলে জানিয়েছেন মৃতার পরিবার। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ যদিও এমন আয়োজনে আতঙ্কিত। বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মৃণালকান্তি গিরি বলেন, “আমি ওঁদের আগেই নিষেধ করেছিলাম। ওরা মেনেও নিয়েছিল। আমি জানতাম অনুষ্ঠান হচ্ছে না। কিন্তু দুপুরে শুনলাম লোকজন এসেছে খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে। তাই আর পুলিশ বা স্বাস্থ্য দফতরে জানাতে পারেনি।”

বিশপুর গ্রামের বাসিন্দা আঙুরবালা প্রামাণিক নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয় সপ্তাহ দেড়েক আগে। শনিবার শ্রাদ্ধের পর রবিবার ছিল তাঁদের নিয়মভঙ্গের অনুষ্ঠান। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিমন্ত্রিত ছিলেন প্রায় ৬০০ জন। এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ ওই অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়ে দেখা ম্যারাপ বেঁধে খাওয়ার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। অপরিসর জায়গায় ঘেঁষাঘেষি করে প্রায় ৮০ জন খাচ্ছেন। আমন্ত্রিতেরা যে করোনা-সংক্রমণ বিষয়ে জানেন না, তেমন নয়। তবুও এসে ভিড় বাড়িয়েছেন তাঁরা। কেন এমন পরিস্থিতিতে বাড়ির বাইরে পা রাখলেন তাঁরা?

আমন্ত্রিতদের কয়েকজন বললেন, “করোনাভাইরাস গ্রামের দিকে এখনও আসেনি। তাই, আমাদের ভয় নেই। আর বেশিক্ষণ তো থাকছি না। ফলে কিছু হবে না।” তবে স্বপন গিরি, প্রবীর ঘোষ, সনৎ প্রামাণিক, সঞ্জয় বিশ্বাসরা খেতে খেতে বললেন, “সরাকার যে এমন সতর্কতা জারি করেছে জানি। কিন্তু, পাশাপাশি বাস করি তো! নিয়ন্ত্রণ করেছে, না এলে খারাপ দেখায়। তাই আসতে হল। তবে সরকারের নির্দেশ মতো হাত ধুয়েই খেতে বসেছি। বারে বারে হাত ধুচ্ছিও। খেয়েই চলে যাব।” কিন্তু করোনা-সংক্রমণ তো সময়ে দেখে আসে না? এই প্রশ্নের অবশ্য কোনও জবাব মেলেনি।

মৃতের পুত্র বাসুদেব প্রামাণিক বলেন, “ধর্মীয় রীতি মেনে নিয়মভঙ্গের অনুষ্ঠান করতেই হল। যাঁরা এসেছেন, সকলেই কাছাকাছি গ্রামের। বাইরের আমন্ত্রিতেরা কেউ আসতে পারেননি।” হাসনাবাদের চিকিৎসক অর্ধেন্দু মণ্ডল বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রকোপ আটকানোর জন্য জনতা কার্ফু পালন করাটা খুব জরুরি। তাই এমন অনুষ্ঠান একেবারে ঘরোয়া ভাবে হাতেগোনা কয়েকজনকে নিয়ে সেরে ফেলাটাই সমাজ সচেতনতার পরিচয় হত। সাধারণ মানুষেরও উচিত এখন এই ধরনের অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলা।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Hasnabad Social Gathering
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy