বাঁ দিকে, জনশূন্য পথ। হাবড়া যশোর রোডে। ডান দিকে, বিকেল ৫টায় কাঁসর-ঘণ্টা নিয়ে বসিরহাটের পথে কচিকাঁচারা। ছবি: সুজিত দুয়ারি ও নির্মল বসু
সকালের সচেতনতা বিকেল পাঁচটার পরে পৌঁছে গেল কাণ্ডজ্ঞানহীনতায়। বসিরহাট শহর-সহ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বহু এলাকাতে রাস্তায় ভিড় করে শাঁখ, কাঁসর-ঘণ্টা বাজাতে শুরু করলেন অনেকে। এই কাজে শিশুদেরও রাস্তায় নামিয়ে দিলেন অনেকেই। বোঝা গেল, করোনাভাইরাস নিয়ে বিন্দুমাত্র সচেতনতা নেই এই সব এলাকায়।
ধর্মধটের সকালে মিটিং-মিছিল দেখা যায়। দোকানপাটও খোলা থাকে কিছু কিছু। ট্রেন-বাসের চাকা গড়ালে, তা আটকাতে লাইনে, রাস্তায় বসে পড়েন প্রতিবাদীরা। উত্তর ২৪ পরগনায় এ দিন হাতে গোনা কিছু ট্রেন বাস চলল ঠিকই, কিন্তু যাত্রী প্রায় ছিল না বললেই চলে। দোকানপাট ছিল বন্ধ। কোথাও কোথাও দু’-একটি দোকান খোলা থাকলেও, খদ্দের প্রায় ছিল না বললেই চলে। তবুও এরই মধ্যে বেশ কিছু মানুষকে মোটরবাইক নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে।
সারা দিন বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যায় বসিরহাটের বিভিন্ন প্রান্তে অনেককে রাস্তা বেরিয়ে ঢাক, ঢোল,কাঁসর-ঘণ্টা বাজাতে দেখা যায়।
শহরে টাউনহলের কাছে মার্টিনবার্ন রোডের দাসপাড়া এলাকার থালা, বাটি,কাঁসর, ঘণ্টা বাজিয়ে এক দল খুদে রাস্তায় নেমে মিছিলে পা মেলায়। এলাকার মানুষের বক্তব্য, মহিলাদের উৎসাহেই শিশুরা রাস্তায় বের হয়।
এ দিন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে প্রায় সব কারখানাই ছিল বন্ধ। কারখানার শ্রমিক বস্তিতেও লোকজন বিশেষ চোখে পড়েনি। অন্য রবিবারের তুলনায় এ দিনের বাজারের চেহারাটাই ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। আনাজ বা মাছ বাজারে কোনও বিক্রেতা ছিল না। ফলে ক্রেতাদেরও রাস্তায় নামার কোনও প্রয়োজন ছিল না। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বাজারে লম্বা লাইন ছিল ক্রেতাদের।
করোনা আতঙ্কে মুরগির মাংসের দাম তলানিতে। তার ফলে রহড়া-সোদপুর-ব্যারাকপুরের কিছু জায়গায় গোটা মুরগি কেজি প্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তাতেই ক্রেতার ঢল নামে বাজারে। বৃষ্টির মধ্যে রহড়া বাজারে লাইন দিয়ে মুরগির মাংস কেনেন শতাধিক মানুষ।
হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি থানার সর্বত্র সুনসান ছিল রাস্তাঘাট। হাসনাবাদের দেবীর মোড়, বায়লানি, সন্দেশখালির ন্যাজাট, মালঞ্চ, হিঙ্গলগঞ্জের বাজারে কোনও বিক্রেতা চোখে পড়েনি। খোলা ছিল বেশ কিছু ওষুধের দোকান। তবে সেখানেও ক্রেতা বিশেষ চোখে পড়েনি। রাস্তাঘাটে যানবাহনও তেমন চোখে পড়েনি। বিকেল ৫ টার পর থেকে রাস্তাঘাটে কিছু লোক চলাচল করতে দেখা যায়। সন্ধ্যার দিকে কিছু কিছু দোকানও খোলে।
জনতা কার্ফু সর্বাত্মক ধর্মঘটের কথা মনে পড়িয়েছে বনগাঁয়। মহকুমার সর্বত্র দোকানপাট বাজার সব বন্ধ ছিল। কিছু কিছু জায়গায় সকালের দিকে কয়েকটি মাংসের দোকান খোলা ছিল। বেলা বাড়তে অবশ্য ঝাঁপ পড়ে সেগুলিতে। রাস্তায় অটো-টোটো-বাস কোনও যানবাহন চলেনি। হাতগোনা কয়েটি ভ্যান চলেছে। তাতেও অবশ্য যাত্রী ছিল না। মানুষজনও ঘর থেকে বিশেষ বের হননি। বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখায় ট্রেন চললেও কামরা ছিল কার্যত ফাঁকা। তবে শনিবার রাতে বনগাঁ শহরের মাংসের দোকানগুলিতেও ভিড় উপচে পড়েছিল। রবিবার পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে বন্ধ ছিল। হাবড়া অশোকনগর এলাকাতেও দোকানবাজার সব
বন্ধ ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy