রোদ মাথায় কাজ করছেন দু’জন মিস্ত্রি। তাঁরা জানালেন, আসেননি তিন সহকর্মী, নীলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
তীব্র গরমের প্রভাব পড়েছে শ্রম-বাজারে। চড়া রোদে কাজ করে ইতিমধ্যে শ্রমিকদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফলে অনেকেই পূর্ণ সময়ের বদলে কয়েক ঘণ্টা কাজের চুক্তি করছেন। অনেকে আবার রোদের মধ্যে চাষের জমিতে কাজ করতে রাজি হচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন চাষি ও ঠিকাদারেরা। তাঁদের দাবি, বেশি টাকা দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। এমনই চিত্র দেগঙ্গা, আমডাঙা, বারাসত ব্লক ১-এর বিভিন্ন এলাকায়।
বছরের অন্যান্য সময়ে এই এলাকাগুলি ছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আবাসন এবং সরকারি টেন্ডারের সড়ক, নর্দমার কাজ করতে আসেন হাজার হাজার মানুষ। বারাসত ও কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় রাজমিস্ত্রি ও জোগাড়ের কাজ করেন অনেকে। অনেকে আবার কৃষিশ্রমিকের কাজ করেন। গত কয়েক দিন ধরে দিনের তাপমাত্রা গড়ে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। নাজেহাল হচ্ছেন মানুষ। এই পরিস্থিতিতে কাজে আসা বন্ধ করেছেন বহু শ্রমিক। বারাসত-সহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিক-হাট কার্যত ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বারাসত-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আবাসনের কাজ থমকে গিয়েছে। ঠিকাদারেরা মিস্ত্রি ও জোগাড়ের শ্রমিক পাচ্ছেন না। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজও শ্রমিকের অভাবে বন্ধ রয়েছে।
বারাসত ১, আমডাঙা ও দেগঙ্গা ব্লকের চাষিরা জানালেন, মাঠে কাজ করার শ্রমিক মিলছে না। খেতে জল দেওয়া, গাছের পরিচর্যা ও জমি তৈরির কাজে সমস্যা হচ্ছে। ধান, পাট, ঝিঙে, পটল টমেটো-সহ একাধিক গ্রীষ্মকালীন আনাজ ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে। জলের অভাবে মাটি ফেটে আনাজ নষ্ট হচ্ছে। আমডাঙার কৃষক গণেশ সামন্ত বলেন, ‘‘এখন সকাল ৮টার পরে মাঠে থাকা কষ্টকর। এই গরমে ফসল বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি না এলে শ্রমিকেরা কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন অনেকেই।’’ ধান চাষি সাহাদাত গাজির দাবি, ‘‘চৈত্রের গরমে ধান ও পাট চাষের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’’ বারাসত ১ ব্লকের চাষি শেখ রেজাউল বলেন, ‘‘অনেক টমেটো নষ্ট হচ্ছে। গাছ থেকে তুলে সেগুলি বাক্সে ভরার শ্রমিক পাচ্ছি না।’’ দেগঙ্গার চাষি আনোয়ার মণ্ডল বলেন, ‘‘মাঠে জল দেওয়া, জমি নিড়ানো ও ঝিঙে, পটল, উচ্ছে, বরবটি, গাজর তোলার শ্রমিক টাকা দিলেও পাওয়া যাচ্ছে না।’’
আবাসন নির্মাণ সংস্থার মালিক দেবাশিস দে বলেন, ‘‘আগে প্রতিদিন ভোরে বারাসত, মধ্যমগ্রাম ও সোদপুরের হাজার হাজার শ্রমিক আসতেন কাজের জন্য। সেখানে গত এক সপ্তাহ ধরে আসছেন হাতে গোনা কয়েক জন। অনেক কাজই আটকে গিয়েছে।’’ কদম্বগাছির বাসিন্দা পাথর মিস্ত্রি কুতুব মণ্ডল বলেন, ‘‘কাজ না করলে পেট চলে না। কিন্তু এই গরমে কাজ করতে পারছি না। গত সাত দিন কাজে যাইনি।’’ দত্তপুকুরের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি অরুণ মণ্ডলের কথায়, ‘‘গত চার দিন কাজ বন্ধ রেখেছি। গরম সহ্য করে কাজ করতে পারছি না। শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’’ খিলকাপুরের বাসিন্দা, দিনমজুর গোলাম মণ্ডল বলেন, ‘‘রোদে কয়েক দিন কাজ করে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তাই এখন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি না। সহকর্মীদের অনেকেও কাজ বন্ধ করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy