এলাকায় পুলিশের টহল। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়াল বাসন্তী থানার ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের নেবুখালি গ্রামে। বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। মোটরবাইক ভাঙচুর করে জলে ফেলে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয়েছে এলাকার বাড়িঘরও। ঘটনায় দু’পক্ষের অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ তুলেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েত কাদের দখলে থাকবে তা নিয়ে দু’পক্ষের মাঝেমধ্যেই সংঘর্ষ হয়। এই পঞ্চায়েতের প্রধান ইউসুফ আনসারি একটি খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলে রয়েছেন। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম যাতে ঠিকভাবে চলতে পারে, সে জন্য উপপ্রধান শঙ্কর সর্দারকে ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর শঙ্করকে এই দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই এলাকায় গোলমাল শুরু হয়েছে। শঙ্কর বলেন, “আমাকে ব্লকের তরফ থেকে দায়িত্ব দেওয়াটা যুব তৃণমূলের লোকেরা মেনে নিতে পারেননি। কারণ ইউসুফ এলাকার যুব তৃণমূল নেতা। তাই এলাকার আরও এক যুব তৃণমূল নেতা নাসিরুদ্দিন খাঁ-এর নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে।” নাসিরুদ্দিনের পাল্টা অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ক্ষমতা পেয়েই এলাকায় দুর্নীতি শুরু করেছেন শঙ্কর। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সাধারণ গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তোলা তুলছেন। নাসিরুদ্দিনের কথায়, ‘‘যুব তৃণমূল কর্মীরা এর প্রতিবাদ করায় শঙ্কর ও তাঁর অনুগামীরা আমাদের কর্মীদের উপর হামলা করছে।”
বুধবার সন্ধ্যায় পানিখালি বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল হয়। প্রচুর বোমাবাজি হয়। বাসন্তী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এলাকা থেকে তাজা বোমা উদ্ধার হয়। ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের নতুন করে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ বাধে। যুব তৃণমূলের নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য জলিল লস্করের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা মারার অভিযোগ ওঠে। বাড়ি থেকে বাইক তুলে নিয়ে গিয়ে ভাঙচুর করে জলে ফেলে দেওয়া হয়। বাড়ি ঘরও ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি যুব তৃণমূল কর্মীদেরকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় নাম জড়ায় এলাকার তৃণমূল কর্মী ইয়ামিন মোল্লা, আল আমিন লস্কর, ইদ্রিস মোল্লাদের। এরা সকলেই শঙ্করের অনুগামী বলেই এলাকায় পরিচিত।
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, পরিকল্পনা করে তাঁদের কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে যুব তৃণমূল কর্মীরা। মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তৃণমূল কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরের এই গন্ডগোলের খবর পেয়ে বাসন্তী থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহলদারি চলছে গ্রামে গ্রামে।
এ বিষয়ে বাসন্তী ব্লক তৃণমূলের কনভেনর আব্দুল মান্নান গাজি বলেন, “এটা তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী সংঘর্ষ নয়। কিছু সিপিএমের লোকজন যুব তৃণমূলের জার্সি পরে এলাকায় অশান্তি করার চেষ্টা করছে। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করুক।” বাসন্তীর সিপিএম নেতা রতন বসু বলেন, “নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল ঢাকতে সিপিএমের নাম জড়াতে চাইছে তৃণমূল।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে জানা নেই, খোঁজ নিয়ে বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy