—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
স্কুলে ৯৫ জন পড়ুয়া, কেউ মিড ডে মিল পাচ্ছে না।
মিড ডে মিল বন্ধ নভেম্বর মাসের পাঁচ তারিখ থেকে। রান্নার দায়িত্বে সরকারি ভাবে যে দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ছিলেন, তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় বিজেপির অভিযোগের তির স্থানীয় তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে। স্কুলের বাচ্চারা মিড ডে মিল খেতে না পেয়ে দ্রুত বাড়ি ফিরতে চাইছে বলে স্কুল সূত্রের খবর। এই অবস্থা সন্দেশখালি ১ ব্লকের বয়ারমারি ২ পঞ্চায়েতের চুঁচুড়া হুলোপাড়া জুনিয়র হাই স্কুলের।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের সময়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক সমস্যা হয় বয়ারমারি ২ পঞ্চায়েতের চুঁচুড়া কাছারি পাড়া ও হুলো পাড়ার মধ্যে। অভিযোগ, ভোটের ফল ঘোষণার পরে হুলো পাড়ায় চুঁচুড়া হুলোপাড়া জুনিয়র হাই স্কুলে রান্নার কাজ করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই গোষ্ঠীর মহিলারা কাছারি পাড়ার বাসিন্দা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই গোষ্ঠীর কয়েক জন মহিলা বলেন, “আসলে আমরা বিজেপি করায় স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতা আমাদের কাজ থেকে সরিয়ে অন্য দুই গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে রান্নার কাজ করানোর চেষ্টা করেন। আমরা গোটা বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি। তবে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ মহিলারা আরও জানান, এই স্কুলে কাজ করতে গেলে স্থানীয় হুলো পাড়ার কিছু মহিলাদের দিয়ে বাধা দেওয়া হয়। বলা হয়, তাঁরা হুলো পাড়ার বাসিন্দা নন, তাই কাজ করতে পারবেন না। স্থানীয় মানুষজন জানালেন, জুলাই মাস থেকে স্থানীয় অন্য দু’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে স্কুলে রান্নার কাজ করানোর ব্যবস্থা করেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। তাঁরা কাজ করলেও সরকারি ভাবে পারিশ্রমিক পাননি। পুজোর পরে স্কুল খুলতে আর ওই গোষ্ঠীর মহিলারা আসেননি রান্না করতে। এ দিকে, যাঁদের নিয়ম অনুযায়ী রান্না করার কথা, তাঁরাও অশান্তির ভয়ে আসতে পারছেন না স্কুলে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুলেখা বিশ্বাস বলেন, “পুজোর ছুটি মিটলে স্কুল খোলার পর থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা রান্না করতে কেউ আসছেন না। ফলে স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ। কেন কেউ আসছেন না, জানা নেই।”
সন্দেশখালি ১ বিডিও সায়ন্তন সেন বলেন, “ ওই স্কুলে কোন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কাজ করবেন, তা নিয়ে একটা সমস্যা চলছে কিছু দিন ধরে। যে দু’টি গোষ্ঠী সরকারি ভাবে দায়িত্বে আছে, রান্না তাঁরাই করবেন। অন্য কেউ করলে নিয়ম অনুযায়ী টাকা পাবেন না। মিড ডে মিল যত দ্রুত সম্ভব চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুকল্যাণ বৈদ্যের অভিযোগ, “লোকসভা ভোটে বিজেপি করার অপরাধে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাজ করতে বাধা দিচ্ছেন বয়ারমারি ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান আকবর আলি গাজি। উনি স্থানীয় মহিলাদের এগিয়ে দিয়ে পিছন থেকে মদত দিচ্ছেন। উপপ্রধানের ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। এ দিকে, স্কুলের বাচ্চারা মিড ডে মিল খেতে পাচ্ছে না। রান্না করে যে সামান্য আয় করতেন কিছু মহিলা, সেটাও বন্ধ।”
আকবর অবশ্য বলেন, “আমি এর সঙ্গে যুক্ত নই। স্থানীয় মহিলারা চান, ওই স্কুলে যেহেতু তাঁদের বাচ্চারা পড়ে, তাই তাঁরা রান্না করবেন। কিন্তু আমি ওঁদের বুঝিয়েছি, এ ভাবে রান্না করার দায়িত্ব নেওয়া যায় না। আমি চাই, স্কুলে মিড ডে মিল চালু হোক। যাঁরা রান্না করতেন, তাঁরা আমার কাছে এলে সাহায্য করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy