E-Paper

‘তোলা’ মেলেনি, বাড়ির কাজে বাধায় অভিযুক্ত ভাঙড়ের তৃণমূল নেত্রী

এলাকায় স্বামী-সন্তান নিয়ে দরমার বেড়া দেওয়া ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেন তাপসী মণ্ডল। তিনি অন্যের বাড়িতে গৃহ-সহায়িকার কাজ করেন।

স্বামীর সঙ্গে বেড়ার ঘরের সামনে তাপসী মণ্ডল। ছবি: সামসুল হুদা

স্বামীর সঙ্গে বেড়ার ঘরের সামনে তাপসী মণ্ডল। ছবি: সামসুল হুদা

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৪১
Share
Save

সরকারি প্রকল্পে ঘর মেলেনি। টাকা জমিয়ে এবং ধারদেনা করে ঘর বানাচ্ছেন ভাঙড় ২ ব্লকের বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের ধর্মতলা হাজরাতলার এক দরিদ্র সম্পতি। কিন্তু তোলাবাজির টাকা না-দেওয়ায় সেই ঘর তৈরির কাজেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাসন্তী মণ্ডল নামে স্থানীয় এক তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে। বাসন্তী অভিযোগ মানেননি।

ওই এলাকায় স্বামী-সন্তান নিয়ে দরমার বেড়া দেওয়া ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেন তাপসী মণ্ডল। তিনি অন্যের বাড়িতে গৃহ-সহায়িকার কাজ করেন। তাঁর স্বামী আবাসন দেখভালের কাজ করেন। কিছু টাকা জমিয়ে এবং ধারদেনা করে সম্প্রতি বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন তাঁরা। অভিযোগ, গত বুধবার লোকজন নিয়ে এসে সেই বাড়ি তৈরির কাজে বাধা দেন তৃণমূল নেত্রী বাসন্তী। তাপসীর কাছে ঘর তৈরির জন্য ৩০ হাজার টাকা তোলা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাপসী ওই টাকা দিতে অস্বীকার করায় কংক্রিটের পিলারের লোহার রড কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত ঘর তৈরির কাজ বন্ধ রাখতেও বলা হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি তাপসীরা থানায় মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন।

তাপসী বলেন, “ছোট বাচ্চা নিয়ে আমরা স্বামী-স্ত্রী অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইনি। বহু কষ্টে ঘর তৈরির কাজ শুরু করেছি। তোলাবাজির টাকা না দেওয়ায় এখন সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হল। আমরা গরিব মানুষ। কী ভাবে এত টাকা দেব?”

নেত্রী বাসন্তীর দাবি, ‘‘আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তাপসী মণ্ডল জলাভূমি ভরাট করে ঘর তৈরি করছেন। আমি কোনও ভাবেই তা করতে দেব না।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই এলাকায় অধিকাংশ জমি চরিত্রে জলাভূমি (ওয়েট ল্যান্ড)। রাজনৈতিক নেতাদের মদতে রাতারাতি বেআইনি বহুতল নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ, সাধারণ গরিব মানুষ ঘর তৈরি করতে গেলে মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হচ্ছে। গরিব মানুষের পক্ষে যে টাকা দেওয়া অসম্ভব।

বেঁওতা ২ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সাবির শেখ বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে পঞ্চায়েত বা দলের কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ টাকা চাইলে, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। আমরা সব সময় গরিব মানুষের পাশে আছি। ঘর তৈরি করতে গিয়ে যদি কেউ সমস্যায় পড়েন, পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করলে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে।” তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য হাকিমুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। দল এই কাজ সমর্থন করে না। তবে জলাভূমি ভরাট করে কোথাও কোন বেআইনি নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। বাসন্তী মণ্ডলের বিষয়টি দলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। আইএসএফের ভাঙড় ২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেন, “বাসন্তী মণ্ডল পঞ্চায়েত নির্বাচনে হেরে গিয়েছে। তারপরও তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। টাকা ছাড়া তৃণমূল কোনও কাজ করে না। গরিব মানুষ ঘর করতে গেলে মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হচ্ছে। এ জিনিস চলতে পারে না। প্রশাসনকে অনুরোধ করব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।” সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, “টাকা ছাড়া ওরা কিছু বোঝে না। সাধারণ মানুষ ঘর করতে গেলেও মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bhangar PMAY

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।