বিশ্বজিৎ দাস (বাঁ দিকে), শান্তনু ঠাকুর (ডান দিকে)
লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে আরও কিছু দিন বাকি। রাজনৈতিক দলগুলিও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে বনগাঁ লোকসভা আসনে জোরকদমে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বেশ কিছু দিন ধরেই জোরকদমে জনসংযোগ কর্মসূচি চালাচ্ছেন এলাকায়। সম্প্রতি বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকেও তাঁর এলাকায় নানা জনসংযোগ কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে। দুই দলের দুই নেতার কর্মসূচি ঘিরে কড়া ঠান্ডাতেও সরগরম বনগাঁর রাজনীতি। লোকসভা ভোটে দুই নেতার রাজনৈতিক লড়াই দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে দুই নেতা এবং তাঁদের নেতৃত্ব এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
গত বছর থেকে বিশ্বজিৎ এক নাগাড়ে জনসংযোগ চালাচ্ছেন। প্রথমে দিদির দূত হিসাবে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছেন। মানুষের অভাব-অভিযোগ, সমস্যার কথা শুনেছেন। কিছু সমস্যার সমাধানও করেছেন। এরপরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ায় কর্মসূচিতে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে এসেছিলেন। এই কর্মসূচি সফল করতেও বেশ কিছু দিন ধরে বিশ্বজিৎ গ্রাম ও পুর এলাকায় ঘুরেছেন। দুর্গা, কালীপুজোর দিনগুলিতে বিশ্বজিৎ পুজোমণ্ডপে গিয়ে, শহরের পথে হেঁটে জনসংযোগ চালিয়ে গিয়েছেন। পুজোর মরসুম শেষ হতেই পঞ্চায়েত ধরে ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করছেন তিনি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার এক একটি পঞ্চায়েতে ঘুরছেন জেলা সভাপতি। সঙ্গে থাকছেন স্থানীয় নেতানেত্রীরা। কেন্দ্রের একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা, আবাস যোজনার টাকা না দেওয়া-সহ নানা বঞ্চনার কথাও তুলে ধরছেন। দুপুরে গ্রামের মানুষের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করছেন। উদ্বাস্তু ও মতুয়া সমাজকে নাগরিকত্ব নিয়ে আশ্বস্ত করছেন।
বিশ্বজিতের অবশ্য দাবি, এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই। তাঁর কথায়, “আমরা ভোটের কথা ভেবে মানুষের সঙ্গে থাকি না। বছরভর মানুষের পাশে থাকি। তাঁদের সমস্যা মেটাই।” বিশ্বজিতের দাবি, “গত পাঁচ বছর শান্তনু ঠাকুরকে দেখা যায়নি। এলাকায় কোনও উন্নয়ন করেননি। এখন ভোটের সময়ে বসন্তের কোকিলের মতো মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে কোনও লাভ হবে না।”
অন্য দিকে, শান্তনু ঠাকুরও জোরকদমে জনসংযোগ শুরু করেছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচি, সরকারি কর্মসূচির সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিজের সাংসদ তহবিলের টাকায় হোক বা সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন। রোজই রাজনৈতিক, সামাজিক, সরকারি বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। সমস্যা, অভাব-অভিযোগের কথা শুনছেন। শান্তনুর দাবি, বনগাঁ লোকসভা এলাকায় ইতিমধ্যেই তিনি ৬টি অ্যাম্বুল্যান্স দান করেছেন। একশোর উপরে হাইমাস্ট আলো বসিয়েছেন। সাড়ে এগারো হাজার প্রতিবন্ধী মানুষকে ট্রাই সাইকেল-সহ নানা সরঞ্জাম তুলে দিয়েছেন। স্নানের ঘাট নির্মাণ করেছেন। ইছামতী নদী সংস্কারের কাজ শুরু করিয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষদের আশ্বাস দিয়ে শান্তনু জানাচ্ছেন, লোকসভা ভোটের আগে নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন (সিএএ) কার্যকর হবে বলে তিনি আশাবাদী। কর্মসূচিতে শান্তনুর সঙ্গে থাকছেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল-সহ বিজেপি নেতারা। তবে কয়েক জন বিধায়ককে দেখা যাচ্ছে না।
বিশ্বজিতের অভিযোগের বিষয়ে শান্তনু বলেন, “কোভিডের সময়ে তো আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করব না। তৃণমূল নেতারা দেখে নিন, কোভিডের আগে আমার জনসংযোগ। সর্বক্ষণই মানুষের সঙ্গে ছিলাম। এখনও আছি। ভবিষ্যতেও থাকব।” তিনি কি ভোটে দাঁড়াচ্ছেন? শান্তনু বলেন, “ভোটে প্রার্থী হব কি না, তা দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy