Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Bhangar

ভাঙড়ে টাওয়ার বসানো নিয়ে ফের গোলমাল

ভাঙড়ের মরিচা গ্রামের পর এবার শেরপুর গ্রামে পাওয়ার গ্রিড সাব-স্টেশনের হাইটেনশন লাইনের টাওয়ার বসানো নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন চাষিরা।

সুভাষগ্রাম পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন। নিজস্ব চিত্র

সুভাষগ্রাম পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন। নিজস্ব চিত্র

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:০৫
Share: Save:

সমস্যা মিটেও মিটছে না ভাঙড় পাওয়ার গ্রিডের। পাওয়ার গ্রিডকে কেন্দ্র করে গোলমালের জেরে শুধু রক্তই ঝরেনি, প্রাণও গিয়েছে। তার পরে আলোচনার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়েছিল। কিন্তু নতুন নতুন এলাকায় টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু হতেই গোলমাল বাধছে।

ভাঙড়ের মরিচা গ্রামের পর এবার শেরপুর গ্রামে পাওয়ার গ্রিড সাব-স্টেশনের হাইটেনশন লাইনের টাওয়ার বসানো নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন চাষিরা। ওই গ্রামে যে সমস্ত জমির উপর দিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইন টানার কথা, সেই জমির উপরে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন মালিকেরা। তার ফলে আতান্তরে পড়েছে পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ।

পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফাঁকা জমি সার্ভে করে একরকম টাওয়ার বসানোর জন্য নকশা তৈরি করা হয়েছিল। সেই জমিতে ঘর তৈরি হলে সমস্যা হবে। বারবার এমন হলে তো নকশা পাল্টানো যাবে না। সম্প্রতি সোনারপুরের সুভাষগ্রাম থেকে জিরাট পর্যন্ত পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশনের হাইটেনশন লাইনের কেবল নিয়ে যাওয়ার জন্য টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।

সুভাষগ্রামের পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুতের ৪৪০ কেভি হাইটেনশন লাইন যাওয়ার কথা সোনারপুর, ভাঙড়, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা হয়ে জিরাট। ভাঙড় ১ ব্লকের চন্দনেশ্বর, নারায়ণপুর, প্রাণগঞ্জ অঞ্চল হয়ে ভাঙড় ২ ব্লকের চালতাবেড়িয়া, শানপুকুর, পোলেরহাট ১ অঞ্চলের উপর দিয়ে ওই লাইন যাওয়ার কথা। ভাঙড়ের চন্দনেশ্বর বা অন্যান্য এলাকায় সমস্যা হয়নি। তবে প্রাণগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের মরিচা চাষিপাড়া শেরপুর এলাকায় চাষিদের বিক্ষোভের কারণে গ্রিডের হাইটেনশন লাইনের টাওয়ার বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।সোমবার শেরপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টাওয়ার বসানোর জন্য পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ মাঠে যে সমস্ত জমিতে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু করেছিলেন, তা চাষিরা বুজিয়ে দিয়েছেন। কিছু জমির মালিক, স্থানীয় বাসিন্দা রফিক মোল্লা, আমির রাতারাতি গ্রিড কর্তৃপক্ষের চিহ্নিত জমিতে বাড়ি তৈরীর কাজ শুরু
করে দিয়েছেন।

ওই এলাকার চাষি লতিফ গাজি, রশিদ গাজিরা বলেন, ‘‘জমিই আমাদের একমাত্র রুটিরুজি। সামান্য ৩-৪ কাঠা জমি রয়েছে। তাও যদি হাতছাড়া হয়ে যায়, তা হলে খাবো কী?’’ চাষিদের অভিযোগ, যখন গ্রিডের লোকজন জমি সমীক্ষা করতে আসে, তখন এলাকার তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ ও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শামসুল আলম তাঁদের বলেছিলেন, গ্রিডের লোকজন জমি মাপতে গেলে তাদের বেঁধে রাখতে। এখন তাঁরাই বলছেন জমি সমীক্ষা করতে দিতে।

একসময় ভাঙড়ের পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের নতুনহাটে পাওয়ার গ্রিড সাবস্টেশন তৈরি নিয়ে জোর করে জমি দখল সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন ভাঙড়ের বিতর্কিত নেতা আরাবুল ইসলাম। ২০১৭ সালে ১৭ জানুয়ারি ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জমি আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড়। সেই সময় গুলিতে দুই যুবক প্রাণ হারিয়েছিলেন। বিস্তর আলোচনার পরে মেটে সমস্যা। ফের গোলমাল শুরু হতে সিদুঁরে মেঘ দেখছে ভাঙড়।

কাইজার বলেন, গ্রিডের লোকজন যখন ওই এলাকার জমি সার্ভে করতে এসেছিল তখন আমি কিছুই জানতাম না। আমি না জেনে তাঁদেরকে বলেছিলাম, জমি জোর করে মাপতে গেলে বাধা দিতে। পরে পুরো বিষয়টা জেনে চাষিদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।’’ ভাঙড় ১ ব্লকের বিডিও সৌগত পাত্র জানান, তাঁর সমাধানের চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bhangar Electricity Tower
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy