এখানেই মেলে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের (ইনসেটে) দেহ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে মঙ্গলবার উত্তেজনা ছড়াল বাগদার বাজিতপুরে। দেহ আগলে পথ অবরোধ করে জনতা। পুলিশ-জনতার ধস্তাধস্তি বাধে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি। ভিড়ের মধ্যে কয়েকটি বোমা পড়ে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, বোতল ছোড়া হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বাজিতপুরের খেয়াঘাট এলাকায় একটি মাচায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন যুবক। মারামারি হচ্ছে বুঝে ছুটে আসেন আশপাশের মানুষ। দেখা যায়, মাচায় কাদা মাখা অবস্থায় পড়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস (৩৭) ওরফে রবি নামে এক যুবক। তাঁকে উদ্ধার করে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়।
ময়নাতদন্তের পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেহ ফেরে গ্রামে। দেহ আগলে বাজিতপুর তিন রাস্তার মোড়ে গোপালনগর-সিন্দ্রাণী সড়ক অবরোধ করেন গ্রামের মানুষ। তাঁদের দাবি, রবিকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। অভিযোগ, এক সিভিক ভলান্টিয়ার ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকেও গ্রেফতার করতে হবে। নাটাবেড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে জনতার সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে। পুলিশ ফিরে যায়। আক্রান্ত হন ফাঁড়ির ইনচার্জ আশাদুর রহমান মণ্ডল। তিনি একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিলে জনতা দোকানের শাটারে লাথি মারতে থাকে। বাগদার এসডিপিও সুকান্ত হাজরা এবং ওসি উৎসাহ সাহা আরও পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান।
কিন্তু উত্তেজনা আয়ত্তে আনতে পারেনি পুলিশ। মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায় পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। জনতা সাময়িক পিছু হটে। পরে পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। রাত পর্যন্ত অবরোধ চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আশপাশের কয়েকটি থানা এলাকার পুলিশ আসে।
রবির বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে, সন্তোষা কলোনিতে। স্থানীয় মানুষের বিপদে-আপদে এগিয়ে আসতে দেখা যেত তাঁকে।
খেয়াঘাটে একটি টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা কালীমন্দিরের পিছনে নদীর ধারে বাঁশের মাচায় বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজব করতেন সন্ধের দিকে। সোমবার রাতে সেই মাচাতেই তাঁকে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
রবির বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। কারা কেন মারল সেটা পুলিশ তদন্ত করুক।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy