শম্ভুনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবির। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতি সপ্তাহে রক্তদান শিবির। আয়োজন করতে হবে প্রতি পঞ্চায়েতকে। রক্তসঙ্কট মেটাতে এমনই নিদান দিয়েছেন ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক প্রতীক সিংহ। সেই নির্দেশ মেনেই মঙ্গলবার গোসাবা ব্লকের শম্ভুনগর পঞ্চায়েতে রক্তদান শিবিরে রক্ত দিলেন ১৪২ জন।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রক্তের পর্যাপ্ত জোগান অব্যাহত রাখতে ২৮ ডিসেম্বর ওই নির্দেশিকা জারি করেন মহকুমাশাসক। নির্দেশে বলা হয়েছে, চারটি ব্লকের অন্তর্গত সমস্ত পঞ্চায়েতগুলিকে বছরে অন্তত একটি রক্তদান শিবির করতেই হবে। মহকুমাশাসকের দফতরের তরফে নতুন বছরের রক্তদান শিবিরের ক্যালেন্ডারও তৈরি করা হয়েছে। সেই ক্যালেন্ডার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সমস্ত পঞ্চায়েতে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ক্যানিং মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয় রোগীদের। বিশেষত প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও থ্যালাসেমিয়া রোগী রক্তের জন্য এসে হয়রানির শিকার হন। অভিযোগ, ‘ডোনার’ (রক্তদাতা) না নিয়ে এলে বেশিরভাগ সময়ই রক্ত মেলে না। রক্তের অভাবে সম্যায় পড়েন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীরাও।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্যানিং ১, ক্যানিং ২, বাসন্তী ও গোসাবা এই চারটি ব্লক প্রশাসনকে বাধ্যতামূলক রক্তদান শিবির আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক। চারটি ব্লকে মোট ৪৬টি পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে গ্রাম এই শিবির করবে। এতে প্রায় গোটা বছর জুড়েই শিবিরঅনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি পঞ্চায়েতকে কমপক্ষে ৭৫ ইউনিট রক্তের টার্গেট দেওয়া হয়েছে।
মহকুমাশাসক বলেন, “ক্যানিং মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্কে লাগাতার রক্তের সঙ্কট চলছে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন থ্যালাসেমিয়া রোগীরা। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পঞ্চায়েতগুলিকে শিবির আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরে মহকুমার অন্যান্য সরকারি অফিসগুলিকেও প্রয়োজনে শিবির আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হবে।”
প্রশাসনের উদ্যোগে খুশি এলাকার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। ক্যানিংয়ের বাসিন্দা স্বপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমার মেয়ে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি মাসেই ওর রক্তের প্রয়োজন হয়। বেশিরভাগ সময়ে ডোনার নিয়ে গেলে তবেইরক্ত মেলে। কিন্তু সবসময় ডোনার পেতে সমস্যা হয়। আশা করি প্রশাসনের এই উদ্যোগের ফলে হয়রানি কমবে।”
ক্যানিং মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তন্ময় রায় বলেন, “প্রতিমাসে আড়াইশো থেকে তিনশো জন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগী রক্তের জন্য এখানে আসেন। শীতের সমস্যা কম থাকলেও ফি বছর গরমকালে রক্তের চরম সঙ্কট দেখা দেয়। লাগাতার শিবির চললে সমস্যা কমবে বলেই আশা করছি। সরকারি উদ্যোগে এই ধরনের আরও শিবির হলে বহু রোগী উপকৃত হবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy