শঙ্কর আঢ্য
বনগাঁ পুর এলাকায় দলের কর্মী এবং মানুষ যদি তাঁকে না চান, তা হলে স্বেচ্ছায় পুরপ্রধানের পদ ছেড়ে দেবেন বলে জানালেন বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য।
রবিবার সন্ধ্যায় তিনি শহর তৃণমূল কার্যালয়ে দলীয় ওয়ার্ড সভাপতি, যুব সভাপতি নিয়ে বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ ও পুরসভার পাঁচ কাউন্সিলর। বৈঠকে শঙ্কর তাঁদের কাছে জানতে চান, যে সব কাউন্সিলররা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন, তাঁরা ওয়ার্ডের সভাপতি বা কর্মীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেছিলেন কিনা। তাঁদের মতামত নিয়েছেন কিনা। শঙ্কর জানান, ওয়ার্ড সভাপতিরা তাঁকে জানিয়েছেন ওই কাউন্সিলররা তাঁদের কিংবা কর্মীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেননি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘যে সব কাউন্সিলররা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেখিয়েছেন, সেই সব ওয়ার্ডের কর্মী ও জনগণকে নিয়ে দলীয় মিটিং করা হোক। সেখানে দলের ওয়ার্ড সভাপতি, বিধায়ক, শহর ও জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত থাকুন। ওই মিটিংয়ে যদি ওয়ার্ডের দলীয় কর্মী ও জনগণ আমাকে জানান, আমি কোনও উন্নয়ন করিনি বা তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি, তা হলে আমি স্বেচ্ছায় পদ ছেড়ে দেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কাউন্সিলরদের কর্মীরাই তৈরি করেন। সৎ সাহস থাকলে ওয়ার্ডে এসে সভা করে কর্মী ও মানুষের মতামত নিক।’’
রবিবারের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এর মাধ্যমে কাউন্সিলরদের উপরে পাল্টা চাপের কৌশল নিচ্ছেন পুরপ্রধান। যদিও বিদ্রোহী কাউন্সিলররা এমন বৈঠককে গুরুত্ব দিতে নারাজ। অভিজিৎ কাপুরিয়া নামে এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘যে দিন আমরা পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়েছিলাম, সে দিন বনগাঁর মানুষ রাস্তায় নেমে বাজি ফাটিয়ে আনন্দ করে প্রমাণ দিয়েছেন, তাঁরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। পুরপ্রধান সব বুঝেও না বোঝার ভান করছেন।’’ মনতোষ নাথ নামে আর এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘রবিবারের বৈঠকে যাঁদের আনা হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই চাপ দিয়ে আনা হয়েছিল।’’ এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘শীঘ্রই বনগাঁ শহরে কর্মী ও সাধারণ মানুষকে নিয়ে মিছিল করে প্রমাণ করে দেব, মানুষ পুরপ্রধানকে চাইছেন না।’’
বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে ‘অনৈতিক’ কাজের অভিযোগ তুলে দলের ১৪ জন কাউন্সিলর দু’দফায় অনাস্থা প্রস্তাব এনে মহকুমাশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন। বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের দাবি, লোকসভা ভোটে বনগাঁ শহরে তৃণমূলের পিছিয়ে পড়ার একমাত্র কারণ, পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, বামেদের ভোট বিজেপির দিকে চলে যাওয়াতেই ভরাডুবি হয়েছে। তাঁর যুক্তি ছিল, এত ক্ষোভ থাকলে এত দিন কেন তাঁরা জানালেন না। অনাস্থার পিছনে ‘অদৃশ্য শক্তির হাত’ আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব-সহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অসন্তোষের কথা পৌঁছে গিয়েছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেছেন মমতা। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘বুধবার পুরমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কাউন্সিলদের সঙ্গে বৈঠক করে পুরপ্রধানের পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ওয়ার্ডে বৈঠক করে কর্মীদের মতামত নেওয়ার বিষয় এটি নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy