এবার রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের । — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসক তৃণমূল আর বিরোধী বিজেপির তরজা তুঙ্গে। এ বার ‘রক্তগঙ্গা’ বইয়ে দেওয়ার ডাক দিলেন বিজেপির বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক। স্বচ্ছ ভোট না হলে পুলিশ হোক বা তৃণমূল কর্মী, সকলের পিঠেই চেলাকাঠ ভাঙার নির্দেশ দেন কর্মীদের। বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক আবার সরাসরি আঙুল তুলেছেন বাগদার তৃণমূল বিধায়কের দিকে। তাঁকে ‘লাফাঙ্গা’ বলতেও ছাড়েননি। জবাবে তৃণমূল জানিয়েছে, হঠাৎ করে জনপ্রতিনিধি হয়ে গিয়েছেন বলেই এ সব বলেন। বোঝেন না জনপ্রতিনিধি হওয়ার মূল্য কী।
উত্তর ২৪ পরগনা বনগাঁ ব্লকের গাড়াপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে ডেপুটেশন দিতে এসেছিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার। তখনই তিনি শাসকদলকে তোপ দাগেন। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হুঁশিয়ারি দিতেও ছাড়েননি। তাঁর কথায়, ‘‘এই চোরেদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আগামী যে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে, তাতে প্রতিটা বুথে বুথে আমাদের শয়ে শয়ে কার্যকর্তা বিজেপির ঝান্ডা ধরে এগিয়ে আসুন।’’ এর পরেই স্বপন নিদান দিয়ে বলেন, ‘‘আপনারা ভোটের দিন খাবারের ব্যবস্থা রাখবেন। আর গ্যাস রাখবেন না। রাখবেন চেলাকাঠ। বলবেন, রান্নার জন্য চেলাকাঠ এনেছি। যদি স্বচ্ছ ভাবে ভোট হয় নিজেরা রান্না করে খাবেন, যদি স্বচ্ছ ভাবে ভোট না হয়, তা হলে যাঁরা রিগিং করতে আসবেন, যাঁরা মস্তানি করতে আসবেন, সে পুলিশ হোক বা তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী হোক, তাঁদের পিঠে চেলাকাঠ ভাঙবেন।’’
এর পরেই স্বপন জানিয়ে দেন যে, বিজেপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সাধারণ মানুষের অধিকারের হয়ে সওয়াল করে যাবেন তিনি। দরকারে ‘রক্তগঙ্গা’ বইয়ে দেবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সুষ্ঠু ভাবে ভোট হলে কোনও আপত্তি নেই। আর যদি অশান্ত করার চেষ্টা করে, আমরা রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব। সাধারণ মানুষকে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে দেব না।’’
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ব্লকের গাড়াপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনা-সহ ১২ দফা দাবি নিয়ে ডেপুটেশন দিতে এসেছিলেন বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া। তিনি সরাসরি আক্রমণ করেন বাগদার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে। ‘অপদার্থ’, ‘লাফাঙ্গা’ বলতেও ছাড়েননি। অশোকের কথায়, ‘‘হাত-পা ধরে তৃণমূল থেকে এসে বিজেপির টিকিট নিয়ে জিতে পরবর্তী কালে তৃণমূলে চলে গিয়েছে। অপদার্থ বিশ্বাসঘাতক।’’ মনে করিয়ে দেন অনুব্রত মণ্ডল, মানিক ভট্টাচার্য অনেক বড় নেতা হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা জেলে। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আপনিও ছাড় পাবেন না। আপনাকেও জেলের ঘানি টানতে হবে।’’
বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস দুই বিজেপি বিধায়ককে পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘‘হঠাৎ করে জনপ্রতিনিধি হয়ে গিয়েছে। বোঝে না জনপ্রতিনিধির মূল্য কী! এঁরা এসেছেন অন্ধকার জগৎ থেকে। এঁদের ভাষাও অন্ধকার জগতের মানুষের মতো হওয়াই স্বাভাবিক।’’ এখানেই থামেননি। তিনি কটাক্ষ করে আরও বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, এঁরা পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছেন। মতিভ্রম হচ্ছে। এঁরা বুঝতে পারছেন, আগামী দিনে আমাদের জায়গায় নেই। তাই মতিভ্রম হয়ে এ সব বলছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy