সরেজমিন: রঞ্জিতের বাড়িতে পুরপ্রধান। ছবি: সুজিত দুয়ারি
ফাঁকা বাড়িতে একের পর এক চুরির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছিল শহরবাসীর। এ বার বোমাবাজির ঘটনায় আতঙ্ক আরও ছড়াল অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
বুধবার রাতে বোমাবাজি হয় উঁচু কয়াডাঙা আমতলা এলাকায়। অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক রঞ্জিতকুমার পালের বাড়িতে বোমা পড়ে। রঞ্জিত বলেন, ‘‘রাত তখন সওয়া ৩টে। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি, উঠোন ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।’’ বৃদ্ধের দাবি, ‘‘এলাকায় কারও সঙ্গে আমাদের পরিবারের শত্রুতা বা মনোমানিল্য নেই। কী কারণে, কারা বোমা মারল, বুঝতে পারছি না।’’
বোমাবাজির খবর পেয়ে সকালে পুরপ্রধান প্রবোধ সরকার ওই বাড়িতে যান। পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ, পুলিশ খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে পৌঁছয়। সে কথা অবশ্য মানছেন না তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, জমি কেনাবেচা-সংক্রান্ত কোনও বিষয়ের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
আতঙ্কের কারণ
• ১৯ সেপ্টেম্বর: উঁচু কয়াডাঙা এলাকায় একটি বাড়িতে বোমাবাজি
• ১৮ সেপ্টেম্বর: ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাড়িতে তালা ভেঙে চুরি
• ৪ সেপ্টেম্বর: কাঁকপুল এলাকা বাড়িতে চুরি
• ২৭ অগস্ট: বিদ্যাসাগর স্ট্রিটের বাসিন্দা এক মহিলার বাড়িতে চুরি
• ২৮ জুলাই: কাঁকপুল এলাকায় বাড়িতে চুরি
• ২১ জুলাই: গিলাপোল এলাকায় বোমাবাজি
• ৮ এপ্রিল: গুমা নেতাজিনগর এলাকায় এক বাড়িতে চুরি
মঙ্গলবার সকালেই বড়সড় চুরির ঘটনা ঘটেছিল ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী কার্তিক ইন্দু স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসক দেখাতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে সোনার গয়না, নগদ টাকা নিয়ে পালায়। সাম্প্রতিক সময়ে ফাঁকা বাড়িতে চুরি হওয়ার হিড়িক পড়েছে। পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে, মানুষ বাড়িতে তালা দিয়ে বেশি সময়ের জন্য বাজার-হাটে বেরোতে ইতস্তত করছেন। বাড়ি ফাঁকা রেখে কোথাও গেলে যেন সকলে পুলিশকে জানিয়ে যান, থানার তরফে সে কথা প্রচার করা হচ্ছে মাইকে।
অতীতে দুষ্কৃতীদের ‘স্বর্গরাজ্য’ ছিল অশোকনগর। বাসিন্দাদের দাবি, সে তুলনায় আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে ইদানীং। কিন্তু সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় সেই ভরসা ক্রমশ টলছে। পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন শহরবাসী। অশোকনগরে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘বহু দিন পরে অশোকনগরে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ করা না গেলে বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’’ বিজেপি নেত্রী ভাস্বতী সোম বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলার এখানে বেহাল।’’ তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে পুলিশকে। পুরপ্রধান প্রবোধ সরকারের কথায়, ‘‘পুলিশ চেষ্টা করছে। কয়েক জন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশকে বলেছি, রাতে আরও বেশি করে টহল দিতে।’’
পুলিশের বক্তব্য, নিয়মিত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে। গ্রেফতারও করা হচ্ছে দুষ্কৃতীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy