ত্রাণ বিতরণ করতে আসা লোকজনকে নিয়ম মানতে বলছেন বিডিও। নিজস্ব চিত্র।
ত্রাণ দেওয়ার অছিলায় মৌসুনী দ্বীপে এক সঙ্গে অনেক মানুষের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল নামখানার ব্লক প্রশাসন। ইয়াস ও কোটালের প্রভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল নামখানা ব্লকের ভাঙন কবলিত মৌসুনি দ্বীপ। ঘরবাড়ি হারিয়ে সিংহভাগ মানুষেরই এখন আশ্রয়স্থল ফ্লাড সেন্টার ও স্কুলগুলিতে।
ইয়াসের পর থেকেই ওই দ্বীপের দুর্গত মানুষগুলোর জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাবগুলো। এমনকি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন সেখানে। প্রতি দিন লঞ্চ ও নৌকায় এক সঙ্গে বহু মানুষ গাদাগাদি করে দ্বীপে পৌঁছচ্ছেন। ফলে দ্বীপের করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের। তার উপর ত্রাণ দিয়ে ফিরে আসার পথে নদীবক্ষে বেলেল্লাপনা এমনকি মদ্য পানেরও অভিযোগ উঠছে অনেকের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে গোটা দ্বীপে বাড়ছে প্লাস্টিকেরও সংখ্যাও। সমগ্র পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিল স্থানীয় প্রশাসন।
সপ্তাহান্তে কলকাতা থেকে কাছেপিঠে ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লকের মৌসুনি দ্বীপ। বিশেষ করে দ্বীপের বিস্তীর্ণ বালুতটে তৈরি হওয়া হোম-স্টেগুলিকে কেন্দ্র করেই পর্যটন ব্যবসার রমরমা। ইয়াস ও ও পূর্ণিমার কটালে প্লাবিত হয়েছিল মৌসুনি দ্বীপের বহু এলাকা। মূলত বালিয়াড়া, সিগন্যাল পয়েন্ট এবং পয়লাঘেরি এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংস্থা, ক্লাবের তরফে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু হয়। কিন্তু অভিযোগ, ত্রাণ দেওয়ার অছিলায় নিত্যদিন কিছু মানুষ মৌসুনি দ্বীপ কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসার ফলে ছোট্ট দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যেই করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। তাই ত্রাণ বন্টনে লাগাম টানতে একাধিক পদক্ষেপ নিল নামখানার ব্লক প্রশাসন।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কেউ ত্রাণ নিয়ে এলে আগে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। মাস্ক, গ্লাভস পরার পাশাপাশি সব ধরনের করোনা বিধি মেনে দ্বীপে ঢুকতে হবে। মৌসুনি পঞ্চায়েতের উদ্যোগে নদী ঘাটে একটি কিয়স্ক তৈরি করা হয়েছে৷ ত্রাণ দেওয়ার আগে সেই পঞ্চায়েত কিয়স্কেও যোগাযোগ করতে হবে। প্রশাসনের জারি করা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ত্রাণ বন্টন করে ফিরতে হবে ত্রাণ দাতাদের। একটা দলে সর্বোচ্চ ৫ জনের বেশি থাকতে পারবেন না। প্রয়োজনে আলাদা আলাদা দলে ভাগ হয়ে যেতে হবে ত্রাণদাতাদের। আরও বলা হয়েছে, নদী পথে কোন বেলেল্লাপনার অভিযোগ উঠলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ত্রাণ সামগ্রীতে প্লাস্টিকের পরিমাণ কমাতে হবে।
নামখানার বিডিও শান্তনু সিংহ ঠাকুর বলেন, “ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া ভাল কাজ। আমরা সহযোগিতাও করছি। কিন্তু বহু মানুষ ত্রাণ দেওয়ার সুযোগ নিয়ে দ্বীপে বেড়াতে আসছেন। দ্বীপের মধ্যে করোনার সংক্রমণও বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাই ত্রাণ বন্টনে একাধিক নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জল ও শুকনো খাবার ছাড়া অন্য ত্রাণ সামগ্রীতে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy