সাফাইয়ে হাত লাগালেন অর্জুন সিংহ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
ছ’দিন পরেও প্রত্যাহার হল না ভাটপাড়া পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের কর্মবিরতি। পাঁচ মাস বেতন না পাওয়া কর্মীরা রাস্তায় নেমে টাকা সংগ্রহ করে রান্না করে সকলে এক সঙ্গে খাবার খান।
এ দিকে, তাঁদের কর্মবিরতির জেরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জাল উপচে পড়ছে। পুরসভা, থানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি অফিসের সামনেও জমছে জঞ্জাল। সোমবার ঝাড়ু হাতে সাফাই অভিযানে নামেন বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিংহ নিজেই। তবে তাঁর এ দিনের কর্মসূচি স্বচ্ছ ভারত অভিযান বলে জানান অর্জুন। তবে পুর এলাকার বর্তমান পরিস্থিতির জন্যই এই মুহূর্তে তাঁদের স্বাচ্ছ ভারত কর্মসূচি নিতে হল বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক দিন ভাটপাড়ায় যে পরিমান জঞ্জাল জমেছে, তা একদিনের অভিযানে সাফাই সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের বাসিন্দারা। তাঁরা মনে করছেন, সাংসদের এই কর্মসূচি আসলে ‘লোক দেখানো’। অর্জুন অবশ্য জানান, রাজ্য সরকারের প্ররোচনায় পুলিশই সাফাই কর্মীদের কাজে বাধা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন অর্জুন। সাফাই কর্মীরাও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যতক্ষণ না পুরপ্রধান সৌরভ সিংহ তাঁদের সামনে এসে বকেয়া টাকা না মেটাচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন না।
তবে সাফাই কর্মীরা আন্দোলন শুরু করার পর থেকে সৌরভকে পুরসভায় দেখা যায়নি। তাঁর মোবাইলও বন্ধ। সকলেরই প্রশ্ন, পুরপ্রধান গেলেন কোথায়?
অর্জুন বলেন, ‘‘কোথায় আর যাবেন। সৌরভ এখানেই আছেন। রাজ্য সরকার যড়যন্ত্র করছে। পুরসভার গাড়ি বেরোতে দিচ্ছে না। কাজ করতে দিচ্ছে না। ফলে পুরসভার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ ভাবে আটকে রাখা যাবে না। কাগজপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমরা বুধবার আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে কাজে বাধা দেওয়ার মামলা করব।’’
তাঁরা যে সাফাই অভিযান করলেন, তাতে কী লাভ হবে নাগরিকদের। একটা এলাকা না হয় সাফ হলে, বাকি এলাকার কী হবে? অর্জুন বলেন, ‘‘একদিন করেছি। প্রয়োজন হলে ফের করব। আর তা ছাড়া, এ বার আমরা বাইরে থেকে গাড়ি এবং লোক নিয়ে এসে জঞ্জাল সাফাই করব।’’
পুরসভার প্রায় সাড়ে তিন হাজার অস্থায়ী সাফাই কর্মী কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন। এই পুরসভায় অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রায় চার হাজার। তার সিংহভাগই সাফাই কর্মী। রোজ ১৯৭ টাকা মজুরিতে কাজ করেন তাঁরা। কিন্তু গত এপ্রিল মাস থেকে বেতন পাচ্ছেন না। এর আগে বেতনের দাবিতে অনেকবার পুর কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছেন ওই সাফাই কর্মীরা। কিন্তু তাতে ফল মেলেনি।
সাফাই কর্মী প্রণয় দত্ত বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে বেতন মিলছে না। ফলে অনেকের ঘরে খাবার নেই। এ দিন আমরা তাই রাস্তায় বসে পড়ি। পথচলতি অনেক মানুষই আমাদের অর্থ সাহায্য করেছেন। নিজেরাও চাঁদা তুলে খিচুড়ি রান্নার ব্যবস্থা করেছিলাম। রাস্তাতেই বসে আমরা এক সঙ্গে খাবার খেয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy