Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Duttapukur Blast

কোটি কোটি টাকার বাজি-ব্যবসা দত্তপুকুরে

স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুর, বেরুনানপুকুরিয়া, মোচপুল পশ্চিমপাড়া এলাকায় চলে মূল কারবার। চকোলেট বোম, কালীপটকা, তুবড়ি, আছাড় বোমা-সহ বিভিন্ন ধরনের বাজি তৈরি হয়।

duttapukur blast

দত্তপুকুরে নীলগঞ্জের এক গুদাম থেকে উদ্ধার হওয়া বাজি। —নিজস্ব চিত্র।

ঋষি চক্রবর্তী
দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৩ ০৭:২২
Share: Save:

কারখানা ক’টা? কত লোক যুক্ত কারবারে? কত টাকার লেনদেন হয়?

কোনও প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর নেই প্রশাসনের কাছে। তবে দত্তপুকুরের ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজন জানাচ্ছেন, অন্তত হাজারখানেক পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ জড়িয়ে আছেন বেআইনি বাজির কারবারে। বাইরের জেলা থেকেও কাজ করতে আসেন কয়েকশো মানুষ। কোটি কোটি টাকার কেনাবেচা হয় বছরভর।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুর, বেরুনানপুকুরিয়া, মোচপুল পশ্চিমপাড়া এলাকায় চলে মূল কারবার। চকোলেট বোম, কালীপটকা, তুবড়ি, আছাড় বোমা-সহ বিভিন্ন ধরনের বাজি তৈরি হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ রকম। পুজো, বিয়ে ছাড়াও জঙ্গলে বন্যপ্রাণী তাড়ানোর কাজে ব্যবহার হয় এখানকার বাজি। এখানকার বাজি রাজ্যের বিভিন্ন বাজার ছাড়াও ভিন্‌ রাজ্যেও যায়। পাইকারি দরেই বাজি বিক্রি হয় এখান থেকে। উৎসবের মরসুমে দূরদূরান্ত থেকে অনেকে বাজি কিনতে আসেন গ্রামে।

বাজি কারবারিরা অনেকে জানালেন, বাজি তৈরির মালমশলা, কাগজ-প্লাস্টিক লেভেল, প্যাকেট— সবই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। বাড়ি বসে বাজি কাগজে মোড়া, প্লাস্টিক লাগানোর কাজ করেন অনেকে। তবে বারুদের কাজ মূলত হয় বাগান ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে।
বাড়ি ভাড়া দিয়েও অনেকে মোটা টাকা আয় করেন।

মশলা মেশানোর কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের পারিশ্রমিক সব থেকে বেশি। দৈনিক মাথা-পিছু প্রায় ১২০০ টাকা দেওয়া হয়। ওই মশলা মাটির ঘট, কাগজের ছোটো বাক্সে ভরার কাজ করেন আর এক দল। তাঁরা দিনে ৬০০-১০০০ টাকা আয় করেন। পরের ধাপে সলতে লাগানো, রঙিন কাগজে মুড়ে লেবেল লাগানোর কাজ হয়। তাঁরাও দৈনিক শ’পাঁচেক টাকা আয় করেন। শেষ ধাপে যারা বাজি গুনে প্যাকেটে ভরেন যাঁরা, তাঁরাও পান দৈনিক ৫০০ টাকা।

এই বাজি এলাকার শতাধিক গোডাউনে রাখেন ব্যবসায়ীরা। কারও বাড়ির বারান্দা, কারও ঘর, কারও দোকান ভাড়া নেওয়া হয় এই কাজে। গোডাউনের মাপ অনুযায়ী মাসে ৭০০-১০ হাজার টাকা মেলে। রাত হলে গোডাউন থেকে গাড়িতে বাজির বাক্স তোলা হয়। এ কাজ করে দিনে ২০০-৫০০ টাকা আয় করেন অনেকে।

সব মিলিয়ে বেআইনি কারবারে হাজার হাজার মানুষের রুটি-রুজি চলে এই এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা তৈবুর রহমান বলেন, "ইছাপুর নীলগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় এই বেআইনি বাজি ব্যবসায় অনেক নেতাদেরও টাকা লগ্নি আছে‌। হাজার কোটির বেশি লেনদেন হয় সারা বছরে।’’

পুরো বিষয়টি নিয়ে নেতাদের মুখে কুলুপ। মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ কর্তারাও। তবে স্থানীয় বিধায়ক রথীন ঘোষ বিস্ফোরণের দিন প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, বাজি কারবার নিয়ে কিছুই জানতেন না তিনি। যা শুনে বিস্মিত স্থানীয়
মানুষ। নতুন করে আর কিছু বলতে চাননি রথীন।

অন্য বিষয়গুলি:

Duttapukur Blast Duttapukur Blast
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy