গ্রাহকদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
সমবায় ব্যাঙ্কে জমানো টাকা ফেরত না পেয়ে সর্বস্বান্ত হতে বসেছেন হাবড়ার কয়েক হাজার মানুষ। ব্যাঙ্কের দোরে প্রায় এক বছর হত্যে দিচ্ছেন তাঁরা। বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসতেই জুটছে সমর্থন। মাসখানেক ধরে গ্রাহকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। প্রথমে তৃণমূল পরে বিজেপি গ্রাহকদের নিয়ে কর্মসূচি করেছিল। বৃহস্পতিবার পথে নামল সিপিএমও।
হাবড়া হাটথুবা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের গ্রাহকদের টাকা ফেরানোর দাবিতে এ দিন সকালে হাবড়া শহরে হাটথুবা ঘোষপাড়া মোড়ে শুরু হয় সিপিএমের সভা। পরে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা যশোর রোড ধরে মিছিল করে চোংদামোড়ের দিকে যান। ফেরার পথে হাটথুবা এলাকায় যশোর রোড অবরোধ করেন। পুলিশ মিনিট ২০ পর অবরোধ তুলে দেয়। কর্মীরা মিছিল করে নগরউখরা মোড়ের কাছে গিয়ে ফের অবরোধ শুরু করেন। পুলিশ অবশ্য কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখান থেকেও অবরোধ তুলে দেয়। একটি প্রতিনিধি দল থানায় গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয়।
এ দিন সিপিএমের কর্মসূচি চলার সময় এক মহিলা কাঁদতে কাঁদতে হাজির হন। মাইক ধরে তিনি বলতে থাকেন, ‘‘আমি পরিচারিকার কাজ করি। স্বামী নেই। অনেক কষ্ট করে টাকা রেখেছিলাম। দুর্ঘটনায় পা ভেঙে গিয়েছে। ব্যাঙ্কে গিয়ে অনুরোধ করেও টাকা পাইনি।’’ সিপিএমের হাবড়া শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘গরিব আমানতকারীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা চুরি করা হয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত ওই সমবায় বোর্ডর দুর্নীতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে। না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।’’ তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ করেছে। হাবড়া পুরসভার পুরপ্রশাসক, তৃণমূল নেতা নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘ওই সমবায় ব্যাঙ্কে তৃণমূলের বোর্ড ছিল না। আমরাও চাই গরিব মানুষ টাকা ফেরত পান। দোষীরা সাজা পাক।’’
সম্প্রতি গ্রাহকেরা টাকা ফেরতে দাবিতে একত্রিত হয়ে হাবড়া ১ ব্লক অফিসে জমায়েত হয়েছিলেন। বিক্ষোভ দেখিয়ে বিডিও জয়ন্ত দে'র কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। দিন কয়েক আগে গ্রাহকদের নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ধর্না কর্মসূচি পালন করা হয়। থানায় দেওয়া হয় স্মারকলিপিও। তৃণমূলের পরে পথে নেমেছিল বিজেপিও। তাদের মহিলা মোর্চা থানায় সামনে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ মিছিল করে। এ ক্ষেত্রেও দেওয়া হয়েছিল স্মারকলিপি। বিজেপিও পাশে নিয়েছিল গ্রাহকদের।
গ্রাহকেরা টাকা ফেরত পান চায় সব রাজনৈতিক দলই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন এক বছর পর গ্রাহকদের কথা মনে পড়ল। এ ভাবে ‘পাশে দাঁড়ানো’ কি শুধুই ভোটের কথা মাথায় রেখে? সিপিএম নেতা আশুতোষ বলেন, ‘‘জুন মাসেই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতে গঠিত হয়েছিল তদন্ত কমিটি।’’ তৃণমূল নেতা নীলিমেশের মন্তব্য, ‘‘আগে থেকেই প্রশাসন, পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ বিজেপি নেত্রী ভাস্বতী সোম বলেন, ‘‘কয়েকমাস আগে থেকে বাইক, পথসভা, পোস্টারিং হচ্ছে।’’
পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি। গ্রাহকদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘সমর্থন মিললে জোর বাড়ে। কিন্তু আমাদের দাবি, টাকা ফেরত। সেটা হলেই আমরা খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy