ফাইল চিত্র।
বাড়ির পাশেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তার পরেও সাপে কাটা নাবালিকাকে সেখানে না নিয়ে গিয়ে ডাকা হয়েছিল স্থানীয় এক ওঝাকে। ঝাড়ফুঁকের পরে শেষ পর্যন্ত সর্পদষ্ট মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল, তখন চিকিৎসকদের আর বিশেষ কিছু করারও ছিল না। শুধু তাই নয়, মনসার কৃপায় নাবালিকা প্রাণ ফিরে পাবে, এই বিশ্বাসবশে তার দেহ দাহ না করে ভাসিয়ে দেওয়া হল নদীর জলে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের সাগর ব্লকের মৃত্যুঞ্জয়নগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত নাবালিকার নাম শ্রাবণী মালাকার। তার বয়স ৮। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত সে। মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল শ্রাবণী। সেই সময়েই তাকে একটি বিষধর কেউটে ছোবল দেয়। এক পড়শি জানান, মেয়েকে সাপে কেটেছে বুঝতে পেরে স্থানীয় এক ওঝাকে ডেকে আনে পরিবার। ওঝার কসরতে স্বাভাবিক ভাবেই কোনও সুরাহা হয়নি। এর পর নাবালিকা আরও নিস্তেজ হয়ে পড়তে হুঁশ ফেরে পরিবারের। তড়িঘড়ি শ্রাবণীকে নিয়ে যাওয়া হয় সাগর ব্লক হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা নাবালিকাকে অ্যান্টিভেনম ইঞ্জেকশন দিলেও শেষরক্ষা হয়নি। তার কিছু ক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় শ্রাবণীর।
এর পর প্রচলিত বিশ্বাস মেনে বুধবার মুড়িগঙ্গা নদীতে ভেলায় শ্রাবণীর দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। নাবালিকার পরিবারের বিশ্বাস ছিল, নদীর নোনা জলে ভাসিয়ে দিলে মনসার কৃপায় প্রাণ ফিরে পাবে মেয়ে। এলাকায় এই খবর ছড়িয়ে পড়তে নদীর পাড়ে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা।
এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয় মহেন্দ্রগঞ্জ উচ্চতর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহীতোষ দাস। তিনি বলেন, ‘‘এক নাবালিকাকে সাপে কামড়ানোর পরেও তাকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে কী ভাবে ওঝার কাছে নিয়ে গেল পরিবারের লোকজন! বিজ্ঞানের অগ্রগতি যতই হোক না কেন, এখনও বহু মানুষ অন্ধকারে। গ্রামীণ এলাকায় সাপের কামড় নিয়ে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। নয়তো কুসংস্কারের ফাঁদে পড়ে বহু প্রাণ অকালেই চলে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy