Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Scarred Body recovered

ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার, ধৃত স্কুল শিক্ষকের ভাই

পুলিশ জানায়, মফিজুরের স্ত্রী সহেলি আহমেদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সহেলির লিখিত অভিযোগে মসিউরের নাম ছিল না।

ধৃত মসিউর রহমান।

ধৃত মসিউর রহমান। নিজস্ব চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪২
Share: Save:

কুপিয়ে খুন করে এক ব্যক্তির দেহ রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়েছিল আততায়ী। তদন্তে নেমে পুলিশ নিহতের ভাইকে গ্রেফতার করল। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার জামদানি এলাকায়। নিহতের নাম মফিজুর রহমান (৪৬)। বাড়ি বাদুড়িয়া থানার দক্ষিণ চাতরা এলাকায়। ধৃত মসিউর রহমান বনগাঁর রাখালদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে শহরজুড়ে। বৃহস্পতিবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক মসিউরকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, মফিজুরের স্ত্রী সহেলি আহমেদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সহেলির লিখিত অভিযোগে মসিউরের নাম ছিল না। তবে প্রাথমিক তদন্তে মসিউরের নাম উঠে আসায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে এই খুন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ জামদানি এলাকায় গোবরডাঙা-মধুসূদনকাটি সড়কের পাশে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। নিহত ব্যক্তির মাথায়, গলায়, মুখে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল।

দেহ উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যেই নিহতের নাম-পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা। দেহ যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখান থেকে কিছুটা দূরে নম্বরপ্লেট ঢাকা একটি বাইক দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। বাইক চালাচ্ছিলেন মসিউর। বাইকের নম্বর প্লেটের উপরে রবার ব্যান্ড দিয়ে টিসু পেপার মোড়ানো ছিল। মসিউরের জামায় রক্তের ছিটেও দেখা যায়। সঙ্গের ব্যাগে মেলে রক্তমাখা রুমাল, স্যানিটাইজ়ার। মফিজুরের মোবাইল ফোনও ছিল সেই ব্যাগে। মসিউরের কথাবার্তায় অসঙ্গতি দেখে তাঁকে থানায় আনে পুলিশ। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতের দিকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘বাইকের নম্বর প্লেট ঢাকা দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। না হলে হয় তো চোখ এড়িয়ে যেত পুরো বিষয়টাই।’’ তদন্তকরীদের দাবি, দাদাকে খুন করে দেহ ফেলে রেখে বাইক নিয়ে পালাচ্ছিলেন মসিউর।

মসিউর অবশ্য পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, এক ব্যক্তির কাছে তাঁর দাদা টাকা পেতেন। টাকা ফেরত চাইলে সে-ই খুন করে। দাদাকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর জামায় রক্তের ছিটে লেগেছিল। তা হলে বাইকের নম্বর প্লেট কেন ঢাকলেন? মসিউরের দাবি, আততায়ীই ওই কাজ করেছিল। এই দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে পুলিশের অনুমান, বাইকে করে দাদাকে সুনসান জায়গায় নিয়ে গিয়ে রাতের অন্ধকারে কুপিয়ে খুন করেছেন মসিউরই।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মফিজুরদের আর্থিক অবস্থা খুবই ভাল। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি আছে। মফিজুর মাধ্যমিকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রথম হয়েছিলেন। দীর্ঘ দিন ব্রিটেনে ছিল। সেখান থেকে এমবিএ করেছেন। পরে বাদুড়িয়ার বাড়িতে ফেরেন। বাড়ি থেকেই অনলাইন টেড্রিংয়ে শেয়ার মার্কেটে লগ্নি করতেন। বাবা ছিলেন বিডিও। মারা গিয়েছেন। মফিজুর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে কাজকর্মও করতেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে তারা মিলমিশই দেখেছেন। অশান্তির খবর ছিল না। মসিউরের সহকর্মীরা জানালেন, শিক্ষক হিসেবে সুনাম আছে তাঁর। ব্যবহারও ভাল।

মফিজুরের স্ত্রী বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময়ে স্বামী মছলন্দপুরে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরোন। রাত ১১টা জানতে পারি, খুন হয়ে গিয়েছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gaighata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy