E-Paper

‘আর কখনও ট্রেনে চড়ব না’, ঘুমের মধ্যেও আঁতকে উঠছেন সুজল

বারাসত থানা এলাকার রেলবস্তির বাসিন্দা, বছর আঠারোর সুজল রায় কাজ করতে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে। পাঁচ মাস কাজ করার পরে শুক্রবার বাড়ি ফিরছিলেন তিনি।

An image of the boy

বাড়িতে সুজল। সোমবার, বারাসতে।  নিজস্ব চিত্র।

ঋষি চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৮:০২
Share
Save

রেললাইনের পাশের বস্তিতে বেড়ে ওঠা তরুণের কাছেই ট্রেনের হুইস্‌ল ও চাকার শব্দ এখন আতঙ্ক। ঘুমের মধ্যে ফিরে আসছে, বিকট শব্দে প্রবল ঝাঁকুনির স্মৃতি। তিন বার পাল্টি খেয়েছে মানুষ-সহ পুরো কামরা। অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। যশবন্তপুর-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় বাড়ি ফেরার পথে কপালজোরে বেঁচে গিয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারের পরে রবিবার রাতে ফিরেছেন বাড়িতে।

বারাসত থানা এলাকার রেলবস্তির বাসিন্দা, বছর আঠারোর সুজল রায় কাজ করতে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে। পাঁচ মাস কাজ করার পরে শুক্রবার বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ছিটকে যাওয়া যশবন্তপুর-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় ছিলেন। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এবং দুঃস্বপ্নের রাত এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে সুজলকে। দুর্ঘটনার কথা ভুলতে পারছেন না তিনি। মাঝেমধ্য়েই চোখের সামনে ভেসে উঠছে হাড় হিম করা দৃশ্য। ঘুমের মধ্যেও চিৎকার করছেন। আবার কখনও শিয়ালদহ-বারাসত লাইনের ট্রেনের হুইস্‌লের শব্দ শুনলেও হাউমাউ করে উঠছেন। দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা এতটাই ভীতির সৃষ্টি করেছে যে, আর কোনও দিন ট্রেনে না চড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুজল।

সুজল আরও ঠিক করেছেন, কাজের জন্য আর ভিন্‌ রাজ্যেও যাবেন না। বারাসতে যে কাজ পাবেন, সেই কাজই করবেন। তিনি বলেন, ‘‘বারাসতে কাজের অভাব নেই। তবে, বাইরে কাজ বেশি এবং রোজগারও বেশি। কয়েক জন বন্ধু মিলে তাই কাজ করতে গিয়েছিলাম। কপালজোরে বেঁচে গিয়েছি। স্থানীয় লোকেরা অনেক সাহায্য করেছেন। কিন্তু আর কোথাও যাব না, কোনও দিন ট্রেনে পা রাখব না।’’

তবে সুজলের অভিযোগ, উদ্ধারকারীদের সঙ্গে ছিল দুষ্কৃতীরাও। বহু যাত্রীর টাকা, গয়না বা ফোন লুট হয়েছে। অনেকের মতো সুজলকেও খোয়াতে হয়েছে পাঁচ মাস কাজ করে তিল তিল করে জমানো ৯০ হাজার নগদ টাকা। গিয়েছে দু’টি মোবাইল ফোনও। দুর্ঘটনার পরে সুজলকে উদ্ধার করতে গিয়ে মানিব্যাগে থাকা সাড়ে চার হাজার টাকাও নিয়ে নিয়েছে অজ্ঞাত কেউ। সুজল বলেন, ‘‘পরে ব্যাগ পেলেও টাকাটা আর পাইনি।’’

ছেলেকে পেয়ে খুশি মা প্রতিমা রায়। দুর্ঘটনায় ছেলে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। ছেলেকে কাছে টেনে দেখান, হাতে-পিঠে-কোমরে আঘাতের চিহ্ন। প্রতিমা বলেন, ‘‘ছেলে বাড়ি ফিরলেও আতঙ্ক কাটেনি। বাড়ির পাশ দিয়ে ট্রেন গেলেই কেঁপে কেঁপে উঠছে। আর বাইরে পাঠাব না। এখানেই যা জোটে, তাই দিয়েই চলবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Coromandel Express accident Barasat

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।