নেপালের শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র।
আকাশে ক্রমাগত বিদ্যুতের ঝলকানি এবং বজ্রপাতের আওয়াজ শুনে স্ত্রীকে বলেছিলেন, তুমি বাড়ি যাও। আমি শ্যালো মেশিন বন্ধ করে ফিরছি। স্ত্রী ফিরে এলেও বাড়ি ফেরা হল না স্বামীর। বজ্রাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার বর্ণবেড়িয়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নেপাল হালদার (৩৮)। দেহ ময়না তদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নেপালের সামান্য কিছু চাষের জমি আছে। নিজের জমি এবং অন্যের জমি ভাগে নিয়ে চাষবাস করতেন। খেতে পটল ছিল। এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ স্ত্রী ময়নাকে সঙ্গে নিয়ে খেতে গিয়েছিলেন পটলের বীজ ছড়াতে।
সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। বাজ পড়ছিল। বৃষ্টি হচ্ছিল। সঙ্গে বেশ হাওয়া। প্রকৃতির মুখ ভার দেখে নেপাল স্ত্রীকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তিনি শ্যালো মেশিন বন্ধ করে আসছেন বলে জানান।
নেপালের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন ময়না। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘আমি বাড়ি ফিরে চা খাচ্ছিলাম। এক জন ফোন করে খবর দিলেন, স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। মাঠে গিয়ে দেখি, নিথর দেহ পড়ে আছে। ভাবতেই পারছি না, যে মানুষটা আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে একটু পরে ফিরছেন বললেন, তিনি আর ফিরলেন না!’’
দুই ছেলে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে অভাবের সংসার নেপালের। বড় ছেলে নিলয় ঝাউডাঙা হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলে প্রলয় বর্ণবেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। পরিবারে একমাত্র রোজগারে সদস্য ছিলেন নেপাল। তাঁর মৃত্যুর পরে সংসার চলবে কী ভাবে, উত্তর নেই পরিবারের কাছে।
গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নিরুপম রায় বলেন, ‘‘আমরা পরিবারটির পাশে দাঁড়াচ্ছি। সরকারি ক্ষতিপূরণ যাতে পায়, সে জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy