—প্রতীকী চিত্র।
বারাসতের এক বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় দেগঙ্গার বাসিন্দা এক যুবকের। সফিকুল ইসলাম নামে বছর আটত্রিশের ওই যুবক দিন কয়েক আগে পথ দুর্ঘটনায় জখম হন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে রাতভর একাধিক সরকারি হাসপাতালে ঘুরেও চিকিৎসা মেলেনি সফিকুলের। সময় মতো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো গেলে তাঁকে বাঁচানো যেত বলেই দাবি পরিবারের।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সফিকুলের বাড়ি দেগঙ্গার সোহাই-শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের গাংআটি গ্রামে। পেশায় দিনমজুর যুবকের শ্বশুরবাড়ি হাবড়া থানার সোনাকেনিয়ায়। সেখান থেকেই অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা চলছিল। স্ত্রীকে দেখতে ৩১ অগস্ট সোনাকেনিয়ায় গিয়েছিলেন সফিকুল। ১ সেপ্টেম্বর ভোরে বাইক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। হাবড়া-বেড়াচাঁপা রোডে রাস্তার ধারে স্তূপ করে রাখা ইটে ধাক্কা মারেন। মাথায় এবং শিরদাঁড়ায় আঘাত লাগে। পরিবারের লোকজন তাঁকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাঁকে নিয়ে সেখানে যান পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু অভিযোগ, তাঁকে ভর্তি করা যায়নি।
সফিকুলের জামাইবাবু জাহাঙ্গির গাজি বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওযার জন্য হাসপাতালের ট্রলিও মেলেনি। শেষে অ্যাম্বুল্যান্সের ট্রলিতে করেই জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে এ কজন চিকিৎসক ছিলেন। তিনি রোগীকে দেখে জানিয়ে দেন, এখন কর্মবিরতি চলছে। ডাক্তার নেই। রোগী ভর্তি হবে না। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চেষ্টা করার পরে ভর্তি করাতে না পেরে অ্যাম্বুল্যান্সে করেই সফিকুলকে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য একটি হাসপাতালে। অভিযোগ, সেখানেও বহু ক্ষণ অপেক্ষার পরেও মেলেনি পরিষেবা। বলা হয় বেড নেই। এ দিকে, সফিকুলের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে। এরপরে তাঁকে আরও একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ভর্তি করা যায়নি।”
পরিবার সূত্রের খবর, রাতভর এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরে শেষ পর্যন্ত ২ সেপ্টেম্বর ভোরে সফিকুলকে ভর্তি করানো হয় বারাসতের ময়না এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে ৪ সেপ্টেম্বর সফিকুলের অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারের পরে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
সফিকুলের প্রতিবেশী লুৎফর রহমান বলেন, “একটা মৃত্যুর বিচার চেয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন। এ দিকে, তাঁদের আন্দোলনের জেরে কত তরতাজা প্রাণ চলে যাচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে হয় তো সফিকুলকে মরতে হত না।”
বারাসত ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হালিমা বিবি বলেন, “তিলোত্তমার বিচার আমরাও চাই। কিন্তু এক জন তিলোত্তমার বিচার চাইতে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে বিনা চিকিৎসায় কত জনের প্রাণ যাবে, আমরা জানি না!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy