খড়িবাড়ি রাজারহাট রোডে বাইকে ঘুরতে এসেছেন যুবকেরা। কারও মাথায় হেলমেট নেই। ছবি: সুদীর ঘোষ
তিন বাইক আরোহীর রেষারেষি দেখে প্রমাদ গুনছিলেন পথচারীরা। ঘটলও তাই!
দ্রুত গতিতে একটি বাইক ধাক্কা মারে সাইকেলে। দুই বাইক আরোহী ও সাইকেল আরোহী পড়েন চলন্ত অটোর সামনে। মৃত্যু হয় দু’জনের। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে টাকি রোডের দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছির কড়েয়া বটতলা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মফিজুল ইসলাম (২২) ও সেলিম মণ্ডল (২৯)। মফিজুল থাকতেন গোলাবাড়ি। সেলিম ইসলামপুরের বাসিন্দা। বছর চব্বিশের মহম্মদ আক্রম বসেছিলেন বাইকের পিছনে। আশঙ্কাজনক অবস্থা তিনি চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, টাকি রোড ধরে গোলাবাড়ির দিক থেকে দ্রুত গতিতে তিনটি বাইক বারাসতের দিকে যাচ্ছিল রেষারেষি করে। মফিজুল তাঁর বন্ধু আক্রমকে নিয়ে বাইক চালাচ্ছিলেন। বটতলা এলাকায় বাইকটি ধাক্কা মারে সেলিমের সাইকেলে। তিন জন রাস্তায় ছিটকে পড়েন। গোলাবাড়িগামী একটি অটোও এসে পড়ে সেই মুহূর্তে। জখম তিন জনকে উদ্ধার করে পাশের বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ে গেলে মফিজুল ও সেলিমকে মৃত বলে জানান চিকিৎসক।
টাকি রোডে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বিকেল হলেই এই রাস্তায় বাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্য শুরু হয়। আঠারো-কুড়ি-বাইশ বছরের যুবকেরা বন্ধু-বান্ধবীকে পিছনে বসিয়ে দ্রুত গতিতে বাইক চালায় অনেকে। বেশিরভাগের মাথায় হেলমেট থাকে না। একে অন্যের সঙ্গে রেষারেষি চলে। আঠারো বছরের কমবয়সিরাও বাইক চালায় বলে অভিযোগ। এর আগেও বাইকের ধাক্কায় জখম হয়েছেন কেউ কেউ। টাকি রোড, কৃষ্ণনগর রোড, খড়িবাড়ি রোডে প্রায় রোজই চলে বাইকের রেষারেষি। অভিযোগ, এ নিয়ে পদক্ষেপ করতে দেখা যায় না পুলিশকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, শাসনের খড়িবাড়ি রোডের দু’পাশে মাছের ভেড়ি থাকায় তরুণ প্রজন্মের একাংশ বিকেলে সেখানে ঘুরতে যায়। বারাসত ১, আমডাঙা, দেগঙ্গা থেকেও যুবকেরা বাইকে এখানে ঘুরতে আসেন। রাস্তার ফুটপাতে রয়েছে প্রচুর দোকান। বিকেলে সেখানে চা, তেলেভাজা বিক্রি হয়। ক্রেতাদের বেশিরভাগই বাইকে আসা সদ্য তরুণ-তরুণী। এই সব রাস্তায় চলে বাইক রেস। তা দেখতেও রাস্তার পাশে ভিড় করেন অনেকে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘প্রতি দিন বিকেলে এই জায়গা মেলার চেহারা নেয়। বাইকের রেষারেষি দেখলে মনে হয় সার্কাস চলছে। এলাকার অনেকেই আসেন তা দেখতে। এতে তরুণেরা আরও উৎসাহ পায়।’’
যদিও পুলিশের দাবি, রাস্তার বিভিন্ন অংশে তারা টহল দেয়। নিয়মিত ধরপাকড় জরিমানা চলে। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘টাকি রোডে আগেই স্পিড ব্রেকার আছে। আরও বেশ কয়েকটি করতে নির্দেশ দিয়েছি। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক রুট হওয়ায় টাকি রোড দিয়ে আমদানি-রফতানির পণ্যবাহী যান চলাচল করে। চওড়া কম হওয়ায় গার্ড রেল দেওয়া সম্ভব নয়। তবুও যতক্ষণ ছোটো গাড়ি চলবে, ততক্ষণ গার্ড রেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশের টহল বাড়ানো হবে সব রাস্তায়।’’ তাঁর মতে, পুলিশ নজরদারি চালালেই শুধু হবে না। তরুণদের হাতে বাইকের চাবি তুলে দেওয়ার আগে অভিভাবকদেরও ভাবতে হবে। না হলে দুর্ঘটনা এড়ানো পুরোপুরি সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy