Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

ভয়ে এলেন না ভাটপাড়ার বহু তৃণমূল কর্মী

এই ‘ভয়’-ই জাঁকিয়ে বসেছে ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়ার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মধ্যে।

ধর্মতলায় শহিদ দিবসের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

ধর্মতলায় শহিদ দিবসের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০১:৫২
Share: Save:

গত ১৪ বছর ধরে টানা একুশের সভায় এসেছেন ভাটপাড়ার সমীর সরকার। কিন্তু রবিবার তিনি আর ধর্মতলায় যাননি। কেন? সমীরবাবুর জবাব, “এলাকার পরিস্থিতি ভাল নয়। বিজেপির লোকেরা চারদিকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সভায় গেলে বিপদে পড়তে হতে পারে।” কাঁকিনাড়ার তৃণমূল কর্মী বিকাশ পাসোয়ান বলছেন, “চারদিকে ওদের সতর্ক নজর। আগে ওরা আমাদের দলেই ছিল। রবিবার এক আত্মীেয়র বাড়ি যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু রাস্তায় শুনলাম, এলাকায় দেখা না গেলে বিপদ হতে পারে। সেই ভয়ে আর কোথাও যাইনি।”

এই ‘ভয়’-ই জাঁকিয়ে বসেছে ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়ার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মধ্যে। আর সেই কারণেই অন্য বারের তুলনায় অনেক কম সমর্থক এ বার রবিবারের ধর্মতলার সভায় যোগ দিতে গিয়েছেন বলে মনে করছেন এলাকার তৃণমূল নেতারা।

গত লোকসভা ভোটে বিজেপি ব্যারাকপুর আসনটি জিতেছে সামান্য ব্যবধানে। তার পরে শিল্পাঞ্চলে প্রায় সর্বত্র তৃণমূলের পার্টি অফিস হাতছাড়া হয়েছে। ভোটে জেতা পুরসভাও বেরিয়ে গিয়েছে হাত থেকে। দু’মাস আগে শুরু হওয়া ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ার গোলমাল এখনও থামেনি। তবে তার মধ্যে দু’টি পুরসভার দখল ফের তারা পেয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। তবুও শিয়ালদহ মেন লাইনে রবিবার সকালের ট্রেনে তেমন ভিড় চোখে পড়েনি।

অন্য বার এই দিনে সকাল থেকে শিয়ালদহগামী লোকাল চলে যেত তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের দখলে। অল্প কিছু গাড়ি এবং বাসও যেত। তবে নৈহাটি এবং ব্যারাকপুর থেকে যাওয়া শিয়ালদহ লোকালে সাধারণ মানুষ কার্যত উঠতেই পারতেন না। তৃণমূলের হিসাবে সব মিলিয়ে এই শিল্পাঞ্চল থেকে ৫০ হাজার কর্মী-সমর্থক ধর্মতলায় যেতেন। এ বারও ট্রেনে ভিড় ছিল। কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি থেকে কিছু তৃণমূল সমর্থক ধর্মতলায় গেলেও ভাটপাড়া,কাঁকিনাড়া, জগদ্দল থেকে দলবদ্ধভাবে ট্রেনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উঠতে দেখা যায়নি।

তৃণমূল নেতারাও মানছেন, লোকসভা ভোটের পরে তাঁদের বহু কর্মী-সমর্থক পদ্ম শিবিরে ভিড়েছেন। ভাটপাড়া-সহ শিল্পাঞ্চলের বড় এলাকা ছিল তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের খাসতালুক। সেই তিনি এখন বিজেপির সাংসদ। তাঁর অনুগামীরা বলছেন, “ভিড় তো হত ওনার কল্যাণে। তিনি দলে না থাকলে কে আর ধর্মতলায় যাবে!” অর্জুন নিজে বলছেন, “কে ওদের ভয় দেখাবে? মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর ভাইপো এবং তৃণমূলের উপরে বিরক্ত। তাই এখান থেকে লোক যায়নি।”

নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলছেন, “যাদের জোর করে বিজেপিতে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছিল, তদের অনেকেই ফিরে এসেছেন। কিন্তু বিজেপি ভয় দেখাচ্ছে। তাই সমর্থকদের বলেছি, দলের সঙ্গে থাকাটাই বড় কথা।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy