Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪

ধর্মতলামুখী তৃণমূলের বাসে, গাড়িতে হামলা

হুগলির গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে তৃণমূলের দু’টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। যার জেরে পুলিশের কাছে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

গুড়াপের কংসারিপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে তৃণমূল নেতার ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। ছবি: দীপঙ্কর দে

গুড়াপের কংসারিপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে তৃণমূল নেতার ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। ছবি: দীপঙ্কর দে

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৬
Share: Save:

তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ধর্মতলাগামী গাড়ি ধরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের কাটমানি ফেরত চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে ধর্মতলাগামী তৃণমূলের গাড়িতে হামলা ও বাধার অভিযোগে নাম জড়াল বিজেপির।

হুগলির গুড়াপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে তৃণমূলের দু’টি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। যার জেরে পুলিশের কাছে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। গুড়াপের খানপুরে একটি বাস ভাঙচুর হয়। ধনেখালিতে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থেকে আসা একটি বাসে ইট ছোড়া হয় এবং ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। আরামবাগের বসন্তপুর থেকে একটি বাস সম্মেলনে যেতেই পারেনি। বাঁকুড়াতেও কয়েকটি বাসে হামলা হয়। দিলীপবাবুর ‘উস্কানি’র জেরেই ওই সব ঘটনা বলে দাবি শাসক শিবিরের। অভিযোগ উড়িয়ে দিলীপবাবুর দাবি, ‘‘আমরা কিছু করিনি। চাইলেই করতে পারতাম। আমরা এ ধরনের রাজনীতি করি না।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া শহরের তৃণমূলের আইনজীবী সেলের সভাপতি রথীন দেব গাড়িতে চেপে এ দিন ধর্মতলার সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, সকাল ৯টা নাগাদ হুগলির গুড়াপের কংসারিপুর মোড়ের কাছে খাওয়ার জন্য হোটেলের খোঁজ করতে গাড়ির গতি কমাতেই ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবি তুলে বিজেপির লোকেরা হামলা করে। গাড়ির গতি বাড়াতে ইট ছুড়ে পিছনের কাচ ভেঙে দেয়। রথীনবাবু সিঙ্গুরে দলীয় শিবিরে বিষয়টি জানান। সেখানে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। তখনই ওই রাস্তার কলকাতামুখী ‘লেনে’ সাময়িক ভাবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।

রথীনবাবু পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

ওই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই বর্ধমানের জামালপুরের দিক থেকে সম্মেলনমুখী একটি বাস গুড়াপের খানপুরে আসতেই সেটির উপরে হামলা হয় বলে অভিযোগ। বেগতিক বুঝে বাসটি বর্ধমানের দিকে ফিরে যায়। ঘটনার প্রতিবাদে আজ, সোমবার গুড়াপে মোটরবাইক-মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল।

শনিবার রাত থেকেই তেতে ছিল আরামবাগের বসন্তপুর। ওই রাতে বিজেপি-তৃণমূল মারামারি হয়। তার আগে বিজেপির একটি কার্যালয় দখলের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে রবিবার তাঁদের কার্যালয়ে ঢুকে এক জনকে বিজেপির লোকেরা মারধর করে বলে পাল্টা অভিযোগ তোলে তৃণমূল। ধর্মতলার সম্মেলনের জন্য ভাড়া নেওয়া বাস ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বাসে কাউকে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের অভিযোগ, ‘‘দিলীপবাবু আমাদের সম্মেলনমুখী গাড়িতে হামলার উস্কানি দিয়েছিলেন। তাঁর কথাতেই বিজেপির গুন্ডারা হামলা করল।’’

শনিবার দুপুরে বাঁকুড়ার ওন্দায় সভা করতে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু বলেছিলেন, ‘‘যে সব তৃণমূল নেতারা কলকাতায় যাবেন, তাঁদের রাস্তায় পেলে আগে ধরে কাটমানির টাকা ফেরত নিতে হবে।’’ তখন থেকেই গোলমালের আশঙ্কা করছিলেন অনেকে। ওই রাতেই কলকাতায় রওনা দেওয়া তৃণমূলের কয়েকটি বাসে হামলার অভিযোগ ওঠে। ওন্দার কাঁটাবাড়ি এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে বাস আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ গিয়ে বাস ছাড়ানোর পরে জনতার একাংশ পুলিশ কর্মীদের উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘তিনটি হামলার ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়, বড়শুল, জৌগ্রাম-সহ কিছু জায়গায় বাসে উঠতে বিজেপি তাঁদের বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কর্মীদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Martyrs Day Rally Mamata Banerjee BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE