চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র।
চাকরির দাবিতে বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বহু প্রার্থী। অনেকে বিক্ষোভ দেখান ক্যামাক স্ট্রিটে। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে এক দল কর্মপ্রার্থীকে আটক করে প্রথমে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এন্টালি থানায়। গ্রেফতার নয়, আটক। তাই এক সময় ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু রেল স্টেশনে পৌঁছে দেওয়ার নামে বুধবার হেমন্তের হিমরাতে পুলিশ তাঁদের নানা ভাবে নাকাল করেছে বলে প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ।
ভৌগোলিক ভাবে এন্টালি থানা থেকে সব চেয়ে কাছের রেল স্টেশন শিয়ালদহ। কিন্তু কর্মপ্রার্থীরা জানান, তাঁদের শিয়ালদহে পৌঁছে না-দিয়ে কয়েক জনকে সাঁতরাগাছি, অন্য কিছু প্রার্থীকে উল্টোডাঙা, এক দল প্রার্থীকে দমদম স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঝরাতে ট্রেন না-পেয়ে বেশ কিছু বিক্ষোভকারীকে স্টেশনেই রাত্রিবাস করতে হয়েছে। প্রার্থীদের প্রশ্ন, বিক্ষোভ আটকাতে প্রথমে তাঁদের আটক তো করা হলই। তার পরে আবার এমন নিগ্রহ কেন?
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ ২২ জন প্রার্থীকে নিয়ে পুলিশের গাড়ি বেরোয় এন্টালি থানা থেকে। চাকরিপ্রার্থীরা ভেবেছিলেন, এন্টালির কাছে শিয়ালদহ স্টেশনেই পৌঁছে দেওয়া হবে তাঁদের। কিন্তু তা না-করে এন্টালি থেকে তাঁদের সটান নিয়ে যাওয়া হয় সাঁতরাগাছি স্টেশনে! সুমন পাল নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছে একটা রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়। নির্জন জায়গায় আমাদের সঙ্গে মহিলা কর্মপ্রার্থীরাও ছিলেন। সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে শেষ ট্রেন ধরে হাওড়ায় পৌঁছই। সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে শিয়ালদহ।’’ বৃহস্পতিবার সকালে সুমন মালদহের করিমপুরের বাড়িতে পৌঁছন। বলেন, ‘‘পুলিশের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে গিয়ে আমার মাথায় আঘাত লেগেছে। সিটি স্ক্যান হয়েছে।’’
রাস্তায় পড়ে গিয়ে মাথা ফেটেছিল রানাঘাটের চাকরিপ্রার্থী অরূপ ঘোষের। তাঁর মাথায় সেলাই হয়েছে। বুধবার তাঁরা ক্যামাক স্ট্রিটে বিক্ষোভ দেখান। অরূপ বলেন, ‘‘বুধবার রাতে লালবাজার থেকে আমাদের শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছে দেওয়ার বদলে উল্টোডাঙা স্টেশনে নিয়ে যায়। বেশির ভাগ প্রার্থীরই শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ বলে, শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ নেই। আমাদের সঙ্গে অনেক মহিলা কর্মপ্রার্থী ছিলেন। তাঁরাও অনুরোধ করেন। পুলিশ শোনেনি।’’ অরূপ জানান, উল্টোডাঙা স্টেশন থেকে শিয়ালদহে পৌঁছন তাঁরা। কিন্তু তত ক্ষণে অনেকের শেষ ট্রেন চলে গিয়েছে। অনেককে তাই শিয়ালদহে রাত কাটাতে হয়েছে।
চম্পা ভক্ত নামে নদিয়ার কল্যাণীর এক চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, তাঁরা একসঙ্গে অন্তত ৫০ জন ছিলেন। তাঁরা পুলিশকে বলেছিলেন, হাওড়া বা শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হোক। পুলিশ পৌঁছে দেয় দমদম স্টেশনে। সেখান থেকে রাতের ট্রেন ধরে শিয়ালদহে পৌঁছন তাঁরা। চম্পা বলেন, ‘‘একে তো পুলিশের নখের আঁচড়ে আমার হাত রক্তাক্ত। তার মধ্যে বাড়ি ফেরানোর নামে পুলিশের এ-হেন হয়রানি।’’ পুলিশের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি লালবাজারের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy