আরজি কর-কাণ্ডে বিক্ষোভ। —ফাইল ছবি।
নিয়মানুযায়ী সূর্যাস্তের পরে ময়নাতদন্ত করা যায় না। কিন্তু আর জি করের তরুণী চিকিৎসকের ক্ষেত্রে তাই করা হয়েছিল। তাতে আপত্তি জানিয়ে নোট দিয়েছিলেন ময়নাতদন্তের বোর্ডে থাকা এক সদস্য। কিন্তু তাতে আমল না দিয়েই পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করেছিলেন বলেই অভিযোগ।
মঙ্গলবার ওই নোট এবং আর জি করের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসককে টালা থানার তরফে দেওয়া চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। আর তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ৯ অগস্ট তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর ওই দিনই ময়নাতদন্ত সেরে ফেলতে চেয়েছিল প্রশাসন। সেই মতো আর জি করের সুপার একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেন। তাতে ওই মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক মেডিসিনের প্রফেসর অপূর্ব বিশ্বাস, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর রিনা দাস এবং নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মলি বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাখা হয়। বোর্ড গঠনের নির্দেশিকায় এক সদস্য নোট দিয়ে জানান, বিকেল ৪টের পরে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করতে হলে পুলিশের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা লাগবে। এবং সেই বিষয়ে ২০২১ সালে স্বাস্থ্য দফতরের একটি নির্দেশিকার মেমো নম্বরও তিনি উল্লেখ করেন।
সূত্রের খবর, ২০২১-র ২৩ ডিসেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ওই এসওপি-তে বলা ছিল, আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা ছাড়া খুন, আত্মহত্যা, ধর্ষণ, উদ্ধার হওয়া পচাগলা দেহ এবং রহস্যজনক মৃত্যুর ক্ষেত্রে রাতে ময়নাতদন্ত করা যাবে না।
জানা যাচ্ছে, ওই নোট পাওয়ার পরে টালা থানার এক সাব-ইন্সপেক্টর আর জি করের ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক প্রবীর চক্রবর্তীকে একটি চিঠি লিখে দাবি করেন, বিশেষ কারণে বিকেল চারটের পরে তরুণী চিকিৎসকের দেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে। সেই চিঠি ফরওয়ার্ড করেন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। সূত্রের খবর, এর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ময়নাতদন্ত করানোর বিষয়ে পদক্ষেপ করেন। মৌখিক নির্দেশেই সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত করা হয়। কেন? প্রথম থেকেই সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা।
আর জি করের মতো মেডিক্যাল কলেজে যেখানে মৃতদেহ সংরক্ষণ করার যথেষ্ট উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে সূর্যাস্ত হওয়ার পরেও কেন ময়নাতদন্ত করা হল? আরও প্রশ্ন ওঠে, মাত্র তিন মাস আগে আরএমও থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হওয়া এক চিকিৎসককে কী ভাবে বোর্ডে রাখা হল? আর জি করের ঘটনায় ওই মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কী ভাবে বোর্ড গঠন করে নির্দেশিকা জারি করলেন? এই সমস্ত প্রশ্নের প্রেক্ষিতে অভিযোগ ওঠে, উত্তরবঙ্গ লবির ঘনিষ্ঠ দুই চিকিৎসককে ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ বোর্ডে রাখা হয়েছিল। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময়েও ময়নাতদন্তের বোর্ডে ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ঘনিষ্ঠদের থাকার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। সিনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা অভিযোগ করেছেন যে তাঁরা দেহ রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তা করতে দেয়নি। এই নোট এবং চিঠি সামনে আসায় সেই অভিযোগ জোরদার হল বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy