‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ বা গ্রেফতারির মাধ্যমে প্রতারণার জাল দুই অভিযুক্ত চিরাগ কপূর এবং যোগেশ দোয়া দেশ জুড়ে ছড়িয়েছিল বলে আদালতে দাবি করল ইডি। ভুয়ো অভিযোগে মানুষকে বোকা বানিয়ে নাগাড়ে ভিডিয়ো কলের নজরদারিতে রেখে তারা টাকা আদায় করত বলে অভিযোগ। প্রতারণার বিপুল টাকা নামে বেনামে ৩৫০ থেকে ৪০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই মানিকজোড় সরিয়েও ফেলে বলে আদালতে দাবি করল ইডি।
মঙ্গলবার অভিযুক্তদের বিচার ভবনের সিবিআই বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক দুই অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। দরকারে তদন্তকারীরা সংশোধনাগারে গিয়ে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলেও বিচারকের নির্দেশ। ডিজিটাল গ্রেফতারির মাধ্যমে সাইবার প্রতারণায় ইতিমধ্যে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সে-কথা মনে করিয়ে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী এ দিন বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ১৮০টি অভিযোগ রয়েছে। মূলত দিল্লি থেকে সাইবার প্রতারণা নিয়ন্ত্রণ করা হত। প্রতারণার জাল সারা দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। প্রতারণা চক্রে অভিযুক্তদের গোটা দেশ জুড়ে মিডলম্যান রয়েছে। হেফাজতে থাকাকালীন প্রতারণার বিষয় স্বীকার করেছে অভিযুক্তেরা। তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে।”
তবে এই মুহূর্তে দুই অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই জানিয়ে জেল হেফাজতের আবেদন করে ইডি। দুই অভিযুক্তকে বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করে তাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে জামিনের আবেদন করা হয়। প্রসঙ্গত, দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে তাদের হেফাজতে নেয় ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, দুই অভিযুক্ত প্রতারণা চক্রের মূল মাথা। কিন্তু আরও রাঘব বোয়ালরা এই চক্রে জড়িত। প্রতারণার টাকা বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়েছিল বলে তথ্য সূত্র মিলেছে বলেও ইডির দাবি।
ইডি সূত্রে দাবি, অন্যের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিত প্রতারকেরা। অ্যাকাউন্ট ভাড়া বাবদ এখনও পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রকাশ, বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিতে দুই অভিযুক্ত প্রায় দু’কোটি ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। বিভিন্ন মোবাইল সংস্থার টাওয়ার বসানোর নামেও ওই অভিযুক্তেরা প্রতারণা চক্র চালিয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)