Advertisement
১৫ জানুয়ারি ২০২৫
Jails in West Bengal

অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শ, জেলে মোবাইলের ব্যবহার রুখতে নয়া প্রযুক্তির জ্যামার লাগানোর প্রস্তুতি

কারা দফতর বিভিন্ন রাজ্য সরকারের অধীন হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই বিভাগকে বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও তারা পরামর্শ দিয়েছে।

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অমিত রায়
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩২
Share: Save:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পরামর্শে রাজ্যের জেলগুলিতে বন্দিদের মধ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ঠেকাতে উদ্যোগী হচ্ছে কারা দফতর। রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে নতুন প্রযুক্তির জ্যামার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলের ভিতরে বাংলাদেশি জঙ্গিদের বেশ কিছু কার্যকলাপ ধরা পড়ার পর রাজ্যের কারা ও স্বরাষ্ট্র দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়। কী ভাবে বিষয়টি বন্ধ করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা হয় ওই সমস্ত বৈঠকে। রাজ্যের কারা দফতর সূত্রে খবর, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সেখানকার জঙ্গি সংগঠনগুলির কার্যকলাপ সম্পর্কে নির্দিষ্ট খোঁজখবর নেওয়ার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে কিছু বিশেষ পরামর্শ পাঠানো হয় রাজ্যের কাছে। সেই পরামর্শই বলা হয়, জেলের মোবাইল ফোনের ব্যবহার ঠেকাতে নতুন প্রযুক্তির জ্যামার বসাতে হবে। তার পরেই রাজ্যের প্রায় সব জেলে জ্যামার বসানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কারা দফতর।

বর্তমানে জেলে যে সব জ্যামার রয়েছে, সেগুলির প্রযুক্তি টু-জি মোবাইল নেটওয়ার্ক আটকানোর জন্য। ফলে পুরোনো জ্যামারে টু-জি ফোনের নেটওয়ার্ক ‘ব্লক’ করা যায়। কিন্তু এখন ফোনে ব্যবহার করা হয় ফোর-জি এবং ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক। ফলে জেলের জ্যামারগুলি সে ভাবে কাজে লাগছে না। সেই পরিস্থিতিসাপেক্ষেই জেলে জ্যামারের ‘প্রযুক্তিগত চরিত্র’ বদলাচ্ছে রাজ্যের কারা দফতর। তবে নতুন প্রযুক্তি চালু হলে সংশ্লিষ্ট জেল এবং তার আশপাশের এলাকায় মোবাইল পরিষেবা ব‍্যাহত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট জেলের সরকারি আধিকারিক বা আশপাশের এলাকার কিছু নম্বর যাতে ‘ছাড়’ পায়, তার বন্দোবস্ত আগে থেকে রাখা হবে। তবে তা নির্দিষ্ট কিছু মোবাইল নম্বরের জন্য।

প্রসঙ্গত, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের জেলগুলিতে অত্যাধুনিক জ্যামার না থাকায় বাংলাদেশি জঙ্গিরা জেলের ভিতর থেকে নানা নাশকতার ছক কষছে পশ্চিমবঙ্গে। যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক।

পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৬০টি জেল বা সংশোধনাগার রয়েছে। সেন্ট্রাল জেল, বিশেষ জেল, মুক্ত জেল, জেলা জেল এবং মহকুমা জেল মিলিয়ে ওই ৬০টি জেলে কয়েক হাজার বন্দি রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বহু কুখ্যাত খুনি, ডাকাত-সহ জঙ্গি কার্যকলাপে অভিযুক্তেরা। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি জঙ্গিরাও আছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত তারিকুল ইসলাম ওরফে সুমন ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছিল আনসারুল্লা বাংলা টিমে সদস্য নূর ইসলামের সঙ্গে, এমন প্রমাণ পাওয়ার পরেই কারা দফতরের আধিকারিকেরা বিষয়টি নবান্নে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরকে জানিয়েছিল। তার পরেই জেলে নতুন এবং আধুনিক জ্যামার বসানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন কারা দফতরের এক আধিকারিক। তবে সেই কাজে আরও গতি এসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে বার্তা পাওয়ার পর। প্রসঙ্গত, কারা দফতর বিভিন্ন রাজ্য সরকারে অধীন হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই বিভাগকে বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও তারা পরামর্শ দিয়েছে। সেই পরামর্শ মেনে জেলে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার রুখতে পদক্ষেপ করার কাজ শুরু হয়েছে।

কারা দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, একসঙ্গে রাজ্যের ৬০টি জেলেই জ্যামার বসানো সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজনভিত্তিক ভাবে ধাপে ধাপে জেলগুলিতে জ্যামার বসানো হবে। ইতিমধ্যে দু’টি জেলে জ্যামার বসানোর বিষয়ে দরপত্র (টেন্ডার) আহ্বান করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলে বন্দিদের মধ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার আটকাতে ‘টাওয়ার হারমোনিয়াস কল ব্লকিং সিস্টেম’ (টিএইচসিবিএস) চালু হচ্ছে। আপাতত ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে তা হতে চলেছে প্রেসিডেন্সি জেল এবং দমদম সেন্ট্রাল জেলে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jail West Bengal Jail Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy