Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Bengal Recruitment Case

অভিষেকের ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ থেকে এত কম সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত? ইডির ভূমিকায় প্রশ্ন হাই কোর্টের

ইডি আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, তারা এখনও পর্যন্ত ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ থেকে ১৪৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। বর্তমানে যার বাজারমূল্য অন্তত ২৫০ কোটি টাকা।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের গতি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি অমৃতা সিংহ।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের গতি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি অমৃতা সিংহ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৪ ১৮:৪৮
Share: Save:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থা ও তার ডিরেক্টরদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তির পরিমাণ এত কম কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। ইডির তদন্তকারীদের একাংশের ‘ভূমিকা’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতির প্রশ্ন, এখনও পর্যন্ত যে টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তদন্তকারীরা তার উৎসে পৌঁছতে পেরেছেন কি না। প্রসঙ্গত, ইডি আগেই একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিল, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার সিইও। ইডি এ-ও জানিয়েছিল, সংস্থার ডিরেক্টর পদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অভিষেকের বাবা-মাও। অভিষেক নিজেও এই সংস্থাকে ‘আমার সংস্থা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন গত বছর।

বুধবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে ইডি আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, তারা এখনও পর্যন্ত ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ থেকে ১৪৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। বর্তমানে যার বাজারমূল্য অন্তত ২৫০ কোটি টাকা। মঙ্গলবারই ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার সাড়ে ১৩ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর পরেই ইডির উদ্দেশে বিচারপতি সিংহের প্রশ্ন, ‘‘কোম্পানি আর কোম্পানির ডিরেক্টরদের সম্পত্তির পরিমাণ এত কম কেন?’’ ইডি ও সিবিআইয়ের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা যে রিপোর্ট দিচ্ছেন, তাতে মনে হচ্ছে, এই সংস্থার নিজস্ব কোনও আয়ের উৎস নেই। টাকা অন্য কোথা থেকে আসছে। কোথা থেকে ওই টাকা এসেছে, তা কি আপনারা খুঁজে দেখেছেন?’’

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ইডির কিছু অফিসার তদন্তে গাফিলতি করছেন। এমনকি তাঁদের নামও তিনি জানেন বলে জানিয়েছেন বিচারপতি সিংহ। সেই অফিসারদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘‘পুরো তদন্ত আদালতের নজরদারিতে হচ্ছে। কাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, কাকে করা হবে না, কেন করা হবে না, কখন করা হবে— ইডি অফিসারদের এই সব তথ্য বিশ্বস্ত সূত্র মারফত আমার কাছে রয়েছে।’’

তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। ইডির উদ্দেশে তিনি বলেন, তদন্ত যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে কত দিনের মধ্যে তা শেষ হবে, কত দিনের মধ্যের চার্জ গঠন হবে, তা নিয়ে তিনি যথেষ্ট সন্দিহান। তদন্তে অগ্রগতি না হলে অভিযুক্তেরা জামিনও পেয়ে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি সিংহ। এর প্রেক্ষিতে ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি জামিন পাওয়া মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি তদন্তের স্বার্থে। কিন্তু তদন্তকারীরা তা করতে পারছেন না। কারণ, বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ। তার জন্যই মানিককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না।

পাল্টা বিচারপতি সিংহ জানান, সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিলেও মানিককে জিজ্ঞাসাবাদে তো বাধা নেই। তা তো করতেই পারেন তদন্তকারীরা। তা কেন করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। জবাবে ইডির আইনজীবী জানান, মানিককে যে ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, তা করা যাচ্ছে না রক্ষাকবচের জন্যই। তবে তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন। এর পর সিবিআই ও ইডিকে নতুন করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিংহ। জানিয়েছেন, মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ জুলাই।

অন্য বিষয়গুলি:

Primary Recruitment Case Abhishek Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy