অসৎ উদ্দেশ্যেই স্বাস্থ্যশিবির করা হয়েছিল বলে দাবি গ্রামবাসীদের। —নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্যশিবির থেকে চিকিৎসার জন্য পাণ্ডুয়ার ১১ জন গ্রামবাসীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অভিযোগ, চিকিৎসার নামে ওই হাসপাতালে তিন দিন আটকে রাখা হয়েছিল তাঁদের। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, চিকিৎসা করানোর জন্য নিয়ে গেলেও তা করা হয়নি। উল্টে বার বার তাঁদের রক্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পাণ্ডুয়ার ক্ষীরকুণ্ডি পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বাড়িতে চ়ড়াও হন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপপ্রধানের বাড়ি ও পঞ্চায়েত অফিসের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের নামে ব্যবসা চলছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই উপপ্রধান।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ক্ষীরকুণ্ডি নামাজ গ্রামের একটি স্কুলে স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করেছিল বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতাল। পঞ্চায়েতের অনুমতিতে সে শিবির হয়েছিল বলে খবর। শিবিরের প্রচারে দাবি করা হয়েছিল, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডধারীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো হবে। তা শুনে বহু গ্রামবাসী শিবিরে হাজির হন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে বেছে চিকিৎসার জন্য বর্ধমানের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, এক দিনের নাম করে তিন দিন ধরে সেখানে আটকে রেখে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার নামে বার বার রক্তও নেওয়া হয়েছিল। ঠিক কী চিকিৎসা হচ্ছে, তা বুঝতে পারেননি গ্রামবাসীরা। তিন দিন পার হওয়ায় ভয় পেয়ে যান তাঁরা। হাসপাতাল থেকে ছেলে পার্থকে ফোন করে তাঁদের উদ্ধারের অনুরোধ করেন পাঁচু বাউল দাস নামে এক গ্রামবাসী। সে ফোন পেয়ে পঞ্চায়েতে বিষয়টি জানান পার্থ।
বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামবাসীদের উদ্ধার করে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘কাগজপত্র দেখে জানলাম যে ওই ১১ জনের বর্ধমানের কোথাও অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি হয়েছিল। অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তবে এখন সকলেই সুস্থ।’’
অসৎ উদ্দেশ্যেই স্বাস্থ্যশিবির করা হয়েছিল বলে দাবি গ্রামবাসীদের। শিবিরের অনুমতি কেন দেওয়া হল— জবাবদিহি চেয়ে উপপ্রধান বেবি বাউল দাসের বাড়িতে চড়াও হন তাঁরা। পাণ্ডুয়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের নামে ব্যবসা হচ্ছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে উপপ্রধান বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ওই স্বাস্থ্যশিবিরের অনুমতি দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। গ্রামবাসীরা বলেননি যে তাঁরা বর্ধমানের হাসপাতালে যাচ্ছেন। শিবিরের আয়োজনকারীরাও জানাননি তাঁরা গ্রামবাসীদের নিয়ে যাবেন। বিষয়টি পরে জানতে পেরে তাঁদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করেছি। অনুমতি নিয়েই স্বাস্থ্যশিবির হয়। তবে বিডিও-র অনুমতি নিতে বললেও ওঁরা তা নেননি। এর সঙ্গে আমার সম্পর্ক না থাকলেও বিরোধীরা বাড়িতে চড়াও হল।’’
এ ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হুগলি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমা ভুঁইয়া বলেন, ‘‘পান্ডুয়া হাসপাতালে কয়েক জনের চিকিৎসা হয়েছে শুনেছি। তবে তাঁদের বর্ধমান বা অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে কী করা হয়েছে, তা জানা নেই। এ ধরনের শিবির করার কোনও অনুমতি আমরা দিই না। কী ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy