একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া মজুরির দাবিতে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি লিখতে হবে হাতে। প্রতীকী ছবি।
ঝান্ডা ধরা হাতে আপাতত কলম তুলে লেখা শুধরোনোর চেষ্টায় বাঁকুড়ার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ।
কম্পিউটার থেকে ছেপে বেরোনো চিঠিতে সই নয়, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া মজুরির দাবিতে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি লিখতে হবে হাতে। এমনই নির্দেশ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শ্রমিকদের জন্য চিঠি লিখতে তাই কোথাও দলের কর্মীরা লেখার অভ্যাস চালাচ্ছেন, তো কোথাও এলাকার শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
বড়জোড়ার রামচন্দ্রপুরে একটি প্রাথমিক স্কুল চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, হাজির হয়েছেন শতাধিক একশো দিনের কাজের শ্রমিক। দু’-এক জন লেখার চেষ্টা করলেও বেশির ভাগের হাতের পেন সরছে না। তাঁদের সাহায্যে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা গেল জনা দশেক তৃণমূল কর্মীকে। তাঁদের মধ্যে অতনু রায় বলেন, “ঘণ্টা চারেকের চেষ্টায় সকলে মিলে একশোটির মতো চিঠি লিখেছি। অনেক দিন আগে কলেজের পাঠ মিটলেও লেখালেখির কাজে যুক্ত। খুব অসুবিধা হয়নি।”
ওই বুথের তৃণমূল সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ মানছেন, এত মানুষের জন্য চিঠি লেখা সহজ নয়। দলের কর্মীরা সাহায্য করছেন। তবে শ্রমিকেরা অনেকে পারলেও অন্যকে দিয়ে চিঠি লেখাতে চাইছেন বেশিরভাগই। তাঁদের কর্মসূচির গুরুত্ব বোঝানো হচ্ছে। ওই ব্লকের তৃণমূল সভাপতি কালীদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রত্যেক বুথ সভাপতিকে এলাকার দলীয় কর্মী থেকে স্থানীয় শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের চিঠি লেখার জন্য তৈরি রাখতে বলা হয়েছে।”
হাতের লেখা শুধরোতে নিয়মিত ঘড়ি ধরে অভ্যাস চালাচ্ছেন দলের গঙ্গাজলঘাটি ২ সাংগঠনিক ব্লকের কিছু কর্মীও। তাঁদের মধ্যে জয়দেব মাজি জানান, ব্লক নেতৃত্বের নির্দেশে জনা বারো কর্মী চিঠি লেখার দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে পড়াশোনা শেষের পরে অনেকের আর লেখার অভ্যাস নেই। তাই সমস্যা হচ্ছে। জয়দেব বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে রোজ হাতের লেখা অভ্যাস করছি আমরা। নিজে রোজ দু’পাতা করে লিখছি।”
কোচবিহারের দিনহাটার সভা থেকে অভিষেক ক’দিন আগেও বলেছেন, “বাংলার এক কোটি মানুষ যদি চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীকে জানায় যে প্রাপ্য টাকা দিন, তা হলে কোনও মন্ত্রীর তা আটকে রাখার ক্ষমতা নেই। এক কোটি চিঠি নিয়েই দিল্লি যাব।” সেই মতোই প্রস্তুতি চলছে। দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়দের কথায়, “দলের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশমতো বুথস্তর থেকে একশো দিনের মজুরদের চিঠি সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরির দাবি কেন্দ্রের কাছে পৌঁছনোর এই কর্মসূচি দলের জনসংযোগেও ভূমিকা নেবে।”
বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার অবশ্য কটাক্ষ, “ভোটের প্রস্তুতি ছেড়ে তৃণমূলের লোকজন এখন হাতের লেখা শুধরোনোর চেষ্টা করছেন। তা এক দিকে ভালই। ভোটে হারার পরে ওদের কাজে লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy