স্মৃতি ইরানির পরে এ বার নির্মলা সীতারামন। আবারও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বৈঠকের জন্য জেলা পরিষদের সভাঘর চেয়েও পেল না বিজেপি।
আগামী ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে বৈঠক করতে আসছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই বৈঠকের জন্য জেলা পরিষদের সভাঘর চেয়ে আবেদন করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে তা পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করছে। দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসছেন। মেদিনীপুরের এই সভাঘরটা খুব প্রয়োজন ছিল।’’ জেলা পরিষদে তৃণমূলের দলনেতা অজিত মাইতির অবশ্য দাবি, “ইচ্ছে করে দেওয়া হয়নি তেমন নয়। ওই দিন জেলা পরিষদের সভাঘরে একটা সরকারি বৈঠক রয়েছে। তাই ভাড়া দেওয়া যায়নি।’’
গত মে মাসে একই ঘটনা ঘটেছিল। মোদী সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি পালনে তখন মেদিনীপুরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তাঁর সভার জন্যও জেলা পরিষদের সভাঘরই ভাড়া চেয়েছিল বিজেপি। সেই বারও তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট ওই দিনে সভাঘরে সরকারি বৈঠক রয়েছে। শেষমেশ, শহরের বিদ্যাসাগর হলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সভা হয়। মেদিনীপুরে এসে বিষয়টি জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন স্মৃতিও।
মেদিনীপুর শহরের ভাল সভাঘর বলতে জেলা পরিষদের সভাঘর ‘প্রদ্যোত্ স্মৃতি সদন’। প্রায় এক হাজার আসন, সঙ্গে উন্নতমানের আলো এবং শব্দের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। শহরে আরও কয়েকটি সভাঘর রয়েছে। তবে সেখানে আসন সংখ্যা কম। আলো এবং শব্দের ব্যবস্থাও উন্নত নয়। শুধু বিজেপিই যে জেলা পরিষদের সভাঘর পাচ্ছে না তা নয়। এর আগে সিপিএম নেতৃত্বেরও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দলের জেলা সম্মেলনের জন্য সিপিএম এই সভাঘর ভাড়ায় চেয়ে পায়নি। সিপিএমের দাবি ছিল, মাস দুয়েক আগে আবেদন করা হলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, যে তিনদিন সম্মেলন হওয়ার কথা, সেই তিনদিন আগে থেকে সভাঘর ‘বুক’ রয়েছে। এ দিন বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবুও বলেন, ‘‘জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ওই সভাঘর বিরোধী দলকে ভাড়ায় দিতে ইচ্ছুকই নন! কোনও নিয়মকানুনের বালাই নেই! ওরা যা পারছে, তাই করছে!”
বিজেপি-র এক সূত্রে খবর, বুধবার দুপুরে জেলা পরিষদে গিয়ে সভাধিপতি উত্তরা সিংহের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির অন্যতম জেলা সম্পাদক সুমন্ত মণ্ডল। সুমন্ত অনুরোধ করেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বৈঠক হবে। তাই সভাঘর ভাড়ায় চাওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরাদেবী অবশ্য জানিয়ে দেন, সরকারি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনেক আগের। আগামী ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে আসার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের। সঙ্গে থাকতে পারেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। বৈঠকটি পুরোদস্তুর সাংগঠনিক। ওই দিন মেদিনীপুরে দলের পাঁচ সাংগঠনিক জেলাকে নিয়ে বৈঠক হবে। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুর— এই পাঁচ সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীরা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। মূলত, দলের ‘মহাসম্পর্ক অভিযান’ নিয়ে আলোচনা হবে। সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর জন্য মিসড্ কল মারফত দলের সদস্য সংগ্রহের অভিযান করেছিল বিজেপি। অবশ্য এ ভাবে যাঁদের নাম বিজেপির খাতায় ওঠে তাঁরা আদৌ সংগঠনের কোনও কাজে আসছেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। প্রশ্ন ওঠে। বিজেপি নেতৃত্ব চাইছেন, সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিষয়টি যাচাই করে নিতে। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবুর কটাক্ষ, “তৃণমূল বুঝতে পারুক কিংবা না পারুক, মানুষ বুঝতে পেরেছেন, ২০১৬ সালে বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে! এই সঙ্কীর্ণ রাজনীতির জবাব মানুষই দেবে!” জেলা পরিষদের তৃণমূল দলনেতা অজিতবাবুর অবশ্য জবাব, ‘‘আমরা সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করি না! আর বিজেপির ক্ষমতায় আসার স্বপ্নটা স্বপ্নই থাকবে!” পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে শহরের স্পোটর্স কমপ্লেক্স কিংবা অন্য কোনও সভাঘরে বিজেপির প্রস্তাবিত বৈঠকটি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy