নীল-তৃণার আংটি বদল
বিয়ের আংটি সব সময়েই এক বিশেষ অলঙ্কার সকলের কাছে। বিয়েতে বা তার আগে বাগদান অনুষ্ঠানে আংটি বদলের রীতি রয়েছে বেশির ভাগ পরিবারেই। সাধারণত বাঁ হাতের অনামিকায় এই আংটি পরানো হয়। কিন্তু কেন জানেন কি, নিছক অভ্যাসের বশে বা রীতিমাফিক বলে নয়, এর নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। আর তার পরিধি বিশ্বব্যাপী।
মনে করা হয় এই সংস্কৃতির সূচনা পাশ্চাত্যে। প্রাচীন রোমে বিশ্বাস ছিল, ‘ভেনা এমোরিয়াস’ অর্থাৎ প্রেমের শিরা বাঁ হাতের অনামিকা থেকে সরাসরি হৃৎপিণ্ডে সংযুক্ত হয়েছে। তাই বিয়ের আংটি এই আঙুলে পরা হয়। পরবর্তীকালে এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।
পাশাপাশি চিনের সংস্কৃতি অনুযায়ীও অনামিকায় বিয়ের আংটি পরার চল রয়েছে। কিন্তু এ দেশে নেপথ্য কারণটি রোমের বিশ্বাসের থেকে আলাদা। চিনা উপকথা অনুযায়ী, প্রত্যেক আঙুলের ভিন্ন ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে। বুড়ো আঙুল বাবা মায়ের প্রতিনিধিত্ব করে, তর্জনী আত্মীয়স্বজন ও ভাইবোন। অন্যদিকে মধ্যমা নিজের ও সন্তানদের প্রতিনিধিত্ব করে। আর অনামিকা হল জীবনসঙ্গীর। এই তত্ত্বের কারণেই চিনে অনামিকায় বিয়ের আংটি পরার প্রচলন রয়েছে।
অন্য দিকে, ষোলো শতকে বিখ্যাত ডাচ চিকিৎসক লেভিনাস লেমনিয়াস তাঁর বইতে লেখেন, কোনও মহিলা নিজের অনামিকায় সোনার আংটি ঘষতে থাকলে তাঁর হৃদয়ে এক ধরনের মৃদু আলোড়নের সৃষ্টি হয়। আর সেই কারণে তাঁর দেহ ও মন সতেজ থাকে।
আর ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র কী বলছে এ বিষয়ে? বিশুদ্ধ প্রেম স্বর্গীয় বস্তু এবং নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। জন্মছকে পঞ্চম ভাব থেকে প্রেমের আত্মপ্রকাশের বিচার হয়। কালপুরুষের পঞ্চম ভাব হল সিংহরাশি যা রবির রাশি বা প্রেমের রাশি। আর রবির আঙুল অনামিকা। অতএব অনামিকা প্রেমের আঙুল। বাঁ হাতেই কেন পরানো হয় তার পিছনেও রয়েছে এক কাহিনি। ভারতীয় শাস্ত্রে প্রাচীনকাল থেকেই বামা বলা হয় মেয়েদের। আর অর্ধনারীশ্বরে বাম দিকেই থাকেন নারী। সুতরাং নেপথ্য কারণ ভিন্ন হলেও স্পষ্টতই অনামিকায় বিয়ের আংটি পরার চল রয়েছে বিভিন্ন দেশে।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy