প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার ইতিহাসে হলুদের অবদান এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
প্রাচীন সেই সময় হোক বা আধুনিক, রূপচর্চায় একটা বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে হলুদ। শুধু রূপচর্চাই নয়, হলুদের অনেক ভেষজ উপকারিতাও রয়েছে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর পাশাপাশি, মুখের নিষ্প্রাণ বিবর্ণভাব কাটিয়ে সতেজ উজ্জ্বলতা এনে দেওয়া, মুখের কালো দাগ ছোপ হালকা করা, ব্রণ-ফুসকুড়ি নির্মূল করা বা যে কোনও প্রদাহ কমাতে হলুদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই হলুদকে পরীক্ষিত ভেষজ উপাদানও বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ত্বকে হলুদ ব্যবহারের আগে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর ত্বকের ধরন অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে সেই অনুযায়ী হলুদ ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বকের উপকার পাওয়া যাবে।
হলুদের রস ত্বকে ব্যবহারের বিশেষ কয়েকটি নিয়ম:
শুষ্ক ত্বক: এই ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে হলুদের রস বের করে নিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে কাচের বয়ামে রেখে দিতে হবে। এক দিন পরে তা ব্যবহার করা যেতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বক: ১ টেবিল চামচ হলুদের রসের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। এর পরে ভিজিয়ে রাখা মুলতানি মাটির সঙ্গে পুদিনা পাতা বাটা, ১ চা চামচ তুলসী পাতা বাটা ও ১ চিমটি কর্পূর ভাল করে মিশিয়ে মুখে ১৫ মিনিট পর্যন্ত রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের ভিতরে জমে থাকা তৈলাক্ত ভাব কমে যাবে। পাশাপাশি ব্রণর সমস্যা থাকলে তাও দূর হবে এই পথ্যে।
সাধারণ ত্বক: হলুদের রসের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ ডিমের সাদা অংশ ও ডিমের কুসুম মিশিয়ে নিন। ওই মিশ্রণে যোগ করুন মুগ ডাল বাটা। এর পরে ওই মিশ্রণ ত্বকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিতে হবে।
তবে যাঁরা আল্যার্জি সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে এক বা দু’বারের বেশি হলুদ ব্যবহার করা উচিত নয়। না হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তবে মনে রাখবেন, শুধু মাত্র কাঁচা হলুদ বেটে মুখে মাখলে ত্বক ভীষণ হলদে দেখায়। তাই তার সঙ্গে বেসন বা চন্দন মেশালে ফেসপ্যাকের কার্যকারিতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু ত্বক যে ধরনেরই হোক না কেন, হলুদ ব্যবহারের পরপরই রোদে না বের হওয়াই ভাল। এতে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই ত্বকে হলুদের ব্যবহারের জন্য রাত উপযুক্ত।
যে কোনও ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করতে হলুদ ও ময়দা মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল কমিয়ে ত্বককে করে তুলবে বেশ সংবেদনশীল।
লেবুর রসে রয়েছে ব্লিচিং উপাদান এবং হলুদে রয়েছে ত্বক উজ্জ্বল করার উপাদান। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে হলুদের গুঁড়ো ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ব্যবহার করুন।
হলুদ ও মধুর মিশ্রণ ত্বকের ভেতরের আর্দ্রতা রক্ষা করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে। মধুতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভাবে ত্বক আর্দ্র রাখার বিশেষ ক্ষমতা।
হলুদের মধ্যে আছে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ব্রণ দূর করতে ভাল কাজ করে। সঙ্গে ত্বকের নির্জীবতা দূর করতেও সাহায্য করে। কাঁচা হলুদের সঙ্গে চন্দন গুঁড়ো, লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে উষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
তা ছাড়াও রোদে পোড়া ত্বককে পুনরায় সতেজ করে তুলতে হলুদ বাটা, মুলতানি মাটি, শসার রস ও লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগালে পোড়া দাগ অনেকাংশে হালকা হয়ে আসবে।
চোখের নিচের কালো দাগ দূর ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে হলুদ বেশ কাজ করে। হলুদে রয়েছে নানা ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বক তরুণ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে।
এই প্রতিবেদনটি ‘সাত পাকে বাঁধা’ ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy