বহু বছর ধরে একা একা সফর করছেন। কখনও কর্মসূত্রে, কখনও আবার স্রেফ ঘুরবেন বলেই। এখনও পর্যন্ত ৬০টিরও বেশি দেশে ঘুরে ফেলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় সাফারি করতে ছুটে গিয়েছেন, বড়দিন কাটাতে বেলজিয়ামে চলে গিয়েছেন, ইটালিতে গিয়েছিলেন শুধুমাত্র বিলাসবহুল একটি ভিলায় কয়েক দিন থাকবেন বলে, ইজিপ্টে গিয়ে এক সপ্তাহ কাটিয়ে এসেছেন। সব জায়গায় একাই গিয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনও এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়নি তাঁর। জীবনে দ্বিতীয় বার আর তিনি সেই জায়গায় যাবেন না বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন ৫৪ বছর বয়সি জেরাল্ডাইন জোয়াকিম। ব্রিটেনের ওয়েস্ট সাসেক্সের বাসিন্দা তিনি। ‘ওয়েলনেস কোচ’ (মানসিক স্বাস্থ্যোন্নতির প্রশিক্ষণ দেন যাঁরা) হিসাবে কাজ করেন জেরাল্ডাইন।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি কর্মসূত্রে ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে যাওয়ার পর তিনি এমন পরিস্থিতির শিকার হন যে, আর দ্বিতীয় বার সেখানে ঘুরতে যাবেন না বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন জেরাল্ডাইন। উরুগুয়ে থেকে বিমানে চেপে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। কারাকাস পৌঁছোতে পৌঁছোতে মাঝরাত হয়ে যায় তাঁর। বিমানবন্দর থেকে বার হওয়ার সময় তিনি লক্ষ করেন সেখানে তিনি একা। আর কেউ নেই। সেখানকার একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করার কথা ছিল জেরাল্ডাইনের।
বিমানবন্দর থেকে হোটেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ি বুক করেছিলেন। কিন্তু সেই গাড়ির চালকের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না তিনি। ফোনের নেটওয়ার্কই নাকি পাচ্ছিলেন না জেরাল্ডাইন। বিমানবন্দরে একা বসে থাকতে ভয় পাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ লক্ষ করেন যে, এক জন অপরিচিত তরুণ তাঁর দিকে এগিয়ে আসছেন। তাঁকে দেখে আরও ভয় পেয়ে যান জেরাল্ডাইন।
তরুণ কাছে আসতেই গাড়ির চালক হিসাবে নিজের পরিচয় দেন মহিলাকে। জেরাল্ডাইন আর কোনও উপায় না দেখে তরুণের গাড়িতে চেপে বসেন। গাড়িতে উঠে দেখেন, চালকের পাশের আসনে এক ব্যক্তি বসে রয়েছেন। তাঁকে চেনেন না জেরাল্ডাইন। বিমানবন্দর থেকে হোটেল আধ ঘণ্টার পথ। সেই ত্রিশ মিনিট যেন ভয়ে কুঁকড়ে ছিলেন জেরাল্ডাইন। ব্যাগের ভিতর থেকে একটি ‘পেন নাইফ’ (ধারালো অস্ত্র)বার করে নিয়েছিলেন তিনি। বিপদে পড়লে সেটি ব্যবহার করতে পারেন বলে ভাবছিলেন জেরাল্ডাইন। কোনও রকমে হোটেলে পৌঁছে রাতটুকু কাটান তিনি।
সকাল হতে না হতেই কাজের সূত্রে ইসলা মার্গারিটা নামের একটি দ্বীপের উদ্দেশে রওনা হন জেরাল্ডাইন। কাজ সেরে তিনি যখন আবার বিমানবন্দরে ফিরছেন তখন তাঁর মালপত্র সব চুরি হয়ে যায়। মহিলার দাবি, এক তরুণ তাঁর ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান। পরে অবশ্য চুরি যাওয়া ব্যাগপত্র ফেরত পান তিনি। জেরাল্ডাইন জানান, তিনি নতুন জায়গায় ঘুরতে খুব ভালবাসেন। কিন্তু তিনি দ্বিতীয় বার কারাকাসে যাবেন না।