বহু বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন বলে তরুণের পরিষেবাকে সম্মান জানাতে পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তরুণের চাকরি সংক্রান্ত তথ্য ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়েই চমকে যান তাঁরা। টানা ছ’বছর ধরে সবেতন ছুটি কাটিয়েছেন তরুণ। কিন্তু তা নজরেই পড়েনি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মীদের। মাসের পর মাস বেতন ঢুকে গিয়েছে তরুণের খাতায়। অথচ, তিনি অফিসের কাজকর্ম ফেলে ছুটি কাটাচ্ছিলেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তরুণের নাম জোয়াকুইন গার্সিয়া। ১৯৯০ সালে স্পেনের কাডিজ়ের জলের মিউনিসিপ্যাল ফার্মে কাজ শুরু করেছিলেন গার্সিয়া। জর্জ ব্লাস ফার্নান্ডেজ় নামের এক ব্যক্তি গার্সিয়াকে চাকরি দিয়েছিলেন। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি কাডিজ় শহরে সেই সংস্থার ডেপুটি মেয়র পদে কাজ করেছিলেন। দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জর্জ বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম যে ওঁর কাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সংস্থার অন্য বিভাগ। কিন্তু ২০ বছর পর জানলাম যে, তা আদতে নয়। বহু বছর কাজ করার সুবাদে ওঁকে সম্মান জানাতে পুরস্কার দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম আমরা। পুরনো ফাইল ঘেঁটে জানতে পারি যে, গার্সিয়া টানা ছ’বছর সবেতন ছুটি কাটিয়েছেন।’’
২০১০ সালে যখন পুরস্কার দেওয়ার জন্য গার্সিয়ার খোঁজ করা হয়েছিল, তখন তিনি বেপাত্তা। জর্জ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমি তো বুঝতেই পারছিলাম না কিছু। গার্সিয়া অবসর নিয়েছেন না কি মারা গিয়েছেন— তা স্পষ্ট ছিল না। কিন্তু গার্সিয়া যে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন তা জানতে পারি।’’ জর্জের দাবি, টানা ছ’বছর ধরে ভারতীয় মুদ্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা বেতন পেয়েছেন গার্সিয়া। পরে অবশ্য গার্সিয়াকে খুঁজেও পান তিনি। গার্সিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেন সংস্থার ঊর্ধ্বতনেরা। গার্সিয়ার আইনজীবীর দাবি, কর্মস্থলে অন্য সহকর্মীদের কাছে গার্সিয়া হেনস্থার শিকার হতেন। অকারণে গার্সিয়ার সঙ্গে মশকরা করতেন তাঁরা। সেই কারণে অফিস যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন গার্সিয়া।
আইনজীবীর আরও দাবি, গার্সিয়া ভেবেছিলেন সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে তাঁর চাকরি যেতে পারে। তাই মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন তিনি। সবেতন ছুটিও কাটিয়েছিলেন একই কারণে। গার্সিয়ার মতে, সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর চেয়ে বাড়ি বসে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করা বেশি লাভজনক হবে বলে ভেবেছিলেন তিনি। অফিস ফাঁকি দিয়ে সবেতন ছুটি কাটানোর অভিযোগে গার্সিয়াকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।