মায়ের ভরণপোষণের জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল পারিবারিক আদালত। সেই টাকা দিতেও নারাজ ছেলে। আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলার এক জন ব্যক্তি। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সুরিন্দর সিংহ নামের সেই প্রৌঢ়কে ভর্ৎসনা করল আদালত। মামলার আবেদন দেখে ‘ঘোর কলিযুগ’ বলল আদালত। একই সঙ্গে মামলাটিকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও জানিয়েছেন বিচারপতিরা। সুরিন্দরের আবেদন খারিজ করার পাশাপাশি আবেদনকারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করেছে আদালত, যা তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
সিকন্দর সিংহের মায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিভিশন পিটিশন খারিজ করার সময় বিচারপতি জসগুরপ্রীত সিংহ পুরি জানান, যে ধরনের মামলা আদালতকে নাড়িয়ে দেয়, এই মামলাটি সেই পর্যায়ের। তিনি এও উল্লেখ করেছেন, পারিবারিক আদালতের প্রধান বিচারক যে নির্দেশ দিয়েছেন তা অনৈতিক তো নয়ই, বরং তিনি যে পরিমাণ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তা বেশ কম।
মামলায় বলা হয়েছে, ৫০ বিঘা জমির মালিক ভাগ সিংহ ১৯৯৩ সালে মারা যান। তাঁর পরিবারে ছিলেন বিধবা স্ত্রী সুরজিৎ কউর, দুই পুত্র সিকন্দর ও সুরিন্দর সিংহ। ভাগ সিংহের জমি ভাগ হয় দুই ছেলের মধ্যে। সুরিন্দর মারা যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী অমরজিৎ কউরের হাতে মালিকানা আসে জমির। ভাগ সিংহের বিধবা পত্নী সুরজিতের অভিযোগ, জমি পেয়েও পুত্র ও পুত্রবধূ তাঁর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিচ্ছেন না। তাই স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি বিবাহিত কন্যার সঙ্গে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সে কারণে ৭৭ বছরের বৃদ্ধা সুরজিৎ পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণের দাবি তুলে মামলা দায়ের করেন। পারিবারিক আদালতের প্রধান বিচারক নথিপত্র পর্যালোচনা করে রায় দেন, বৃদ্ধার নিজের কোনও আয়ের উৎস নেই এবং তিনি তার মেয়ের সঙ্গে বসবাস করছেন। পারিবারিক আদালত সিকন্দর ও অমরজিৎকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভরণপোষণের খরচ দিতে নির্দেশ দেয়।
এই রায়ে ক্ষুব্ধ সিকন্দর হাই কোর্টে একটি রিভিশন পিটিশন দাখিল করেন। তাঁর দাবি, বাবার মৃত্যুর পর একটি চুক্তি করা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী তাঁর মাকে ১ লক্ষ টাকা ভরণপোষণ দেওয়া হয়েছিল। এই টাকা পাওয়ার পর তিনি তাঁর মেয়ের কাছে থাকতে শুরু করেছিলেন। সিকন্দরের দাবি, পারিবারিক আদালতের ভরণপোষণের রায় ভুল ও তা বাতিল করতে হবে।