ষোল বছরের বিয়ে, চার সন্তান। সুখেই দিন কাটছিল চিনা যুবকের। কিন্তু তার পরেই তিনি পরিবার সম্পর্কে এমন এক সত্য আবিষ্কার করলেন যে সব শেষ। ভেঙেই গেল তাঁর বিয়ে। রাগে স্ত্রীকে বিচ্ছেদ দিলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল চিনের চেন ঝিক্সিয়ান নামে এক যুবকের সঙ্গে। সেই ঘটনা নিয়ে সে দেশ জুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কী সেই সত্য, যা চেনের ১৬ বছরের দাম্পত্যজীবনে ইতি টানল?
ঘটনার সূত্রপাত ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে। ইউ হুয়া নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন জিয়াংসি প্রদেশের ডেক্সিংয়ের বাসিন্দা চেন। চেনের থেকে ইউ আট বছরের ছোট ছিলেন। চেনের বাবা-মা তাঁকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বলে বেশি কিছু না ভেবে বিয়েতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে বিয়ের কয়েক দিন পরেই ইউ ঘোষণা করেন যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। বাবা হওয়ার আনন্দে চেন এতটাই আনন্দিত হয়ে পড়েন যে তিনি বেশি মাথা ঘামাননি। শীঘ্রই তাঁদের প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
আরও পড়ুন:
পেশায় ট্রাকচালক চেন কর্মসূত্রে বেশির ভাগ সময়েই বাড়ির বাইরে থাকেন। মাসে এক-দু’বার বাড়ি ফিরতেন তিনি। এ ভাবেই দিন কাটছিল। এর পর দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ইউ। তার পরেও ঠিকই চলছিল। তবে ২০১৯ সালে ইউ তৃতীয় বারের জন্য অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সন্দেহ জাগে চেনের মনে। কারণ দীর্ঘ দিন তিনি বাইরে ছিলেন। যদিও ইউ জোর দিয়েই বলেছিলেন যে সন্তান আসতে চলেছে তা চেনের-ই । চেন সে কথা মেনে নেন এবং ইউ তৃতীয় কন্যার জন্ম দেন।
আরও পড়ুন:
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চেন ধাক্কা খান ২০২২ সালের নভেম্বরে। তিনি জানতে পারেন যে উও নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ইউয়ের। শুধু তা-ই নয়, ইউ শাংরাও শহরের একটি হাসপাতালে চতুর্থ কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সেই সময় বাইরে ছিলেন চেন। খবর পেয়ে তিনি ওই হাসপাতালে পৌঁছোন। দেখেন হাসপাতালের ফর্মে বাবার জায়গায় তাঁর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। এর পরেই টনক নড়ে চেনের। চার কন্যার ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেন তিনি। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, চার কন্যাসন্তানের এক জনও চেনের নয়। এর পরেই স্ত্রীকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন চেন। আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
আরও পড়ুন:
আদালতে কন্যাদের হেফাজত এবং মানসিক যন্ত্রণার জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিলেন চেন। তবে পাল্টা চেনের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনেন ইউ। আদালত ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তাঁদের বিচ্ছেদে সিলমোহর দেয়। একই সঙ্গে, বড় এবং মেজো মেয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় চেনকে। এর পর চেন জানান, সব কিছু পিছনে ফেলে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান তিনি। দুই কন্যাকে মনের মতো মানুষ করতে চান।