সদ্য নতুন চাকরি শুরু করেছেন। কিন্তু এক মাস কাটতে না কাটতেই বসের রাগ হাড়ে হাড়ে টের পেলেন তরুণ। সহকর্মীদের সঙ্গে চা-ধূমপানের বিরতি নেওয়া, গল্প করা— এ সব যে অফিসে থেকে করা যাবে না তা জানিয়ে তরুণকে কড়া ভাষায় শাসন করেছিলেন বস্। কিন্তু এই কারণে এক দিন যে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেওয়া হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তরুণ। সমাজমাধ্যমের পাতায় এমন দাবিই করেছেন তিনি।
ঘটনাটি গুরুগ্রামের। মাসখানেক আগে সেখানকার এক স্টার্ট আপ সংস্থায় যোগ দেন এক তরুণ। কিন্তু ১০ দিনের মাথায় বসের ‘নজরে’ পড়ে যান তিনি। তরুণের দাবি, তাঁর বস্ মাঝেমধ্যেই তাঁর আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন। তরুণ নাকি নাকউঁচু স্বভাবের এবং সে কারণে তাঁর সঙ্গে কাজ করা যায় না বলে বকাবকিও করতেন। দিনের পর দিন তাঁকে নিয়ে বসের অভিযোগের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে বলে দাবি করেছেন তরুণ। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি সন্ধ্যা ৭টার সময় অফিস থেকে বেরিয়ে যেতাম। এক দিন বসের নজরে পড়ে যাই। আমি কেন ওই সময় বেরিয়ে যাই তা নিয়ে অনেক কথা শোনালেন। এমনকি ওঁর কেবিনে বসে কাজ করার নির্দেশও দেন।’’
তরুণের সঙ্গে দুই সহকর্মীর ভাল বন্ধুত্ব হয়। কাজের ফাঁকে চা-ধূমপানের বিরতি নিতে তাঁদের সঙ্গে অফিসের নীচে যেতেন তিনি। তা নিয়েও আপত্তি জানান বস্। সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ‘দলবাজি’ করা যাবে না, তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দেন বস্। তরুণ লেখেন, ‘‘বন্ধুর ছুটি হয়ে গিয়েছে কি না তা আমি কেবিন থেকে উঁকি দিয়ে দেখছিলাম। ছুটি হলে দু’জনে একসঙ্গে একটু ধূমপান করতাম। আমায় উঁকিঝুঁকি দিতে দেখেও বস্ কথা শোনাতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে আমায় বরখাস্ত করেন তিনি।’’ তরুণ জানান, চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দিলেও তাঁকে বরখাস্তের কোনও চিঠি তখনও পাঠানো হয়নি। একই দিনে তরুণের ওই সহকর্মীকেও চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন তাঁর বস্। বরখাস্তের চিঠি সাত দিন পর পেলে তা নিয়ে অভিযোগ করেন তরুণ।
তরুণের কথায়, ‘‘আমি যখন প্রশ্ন করলাম যে, চিঠি দিতে এত দেরি হচ্ছে কেন, তখন আমার বস্ বললেন, ‘তুমি কী মনে করো হে? যে দিন চাকরি যাবে সে দিনই বরখাস্তের চিঠি পেয়ে যাবে!’’’ বরখাস্তের চিঠি দেওয়ার পর সংস্থার ম্যানেজারের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তরুণ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বস্ও। অথচ চাকরি সংক্রান্ত কোনও কথা না বলে তিনি নাকি অন্য প্রসঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। তরুণের দাবি, ‘‘আমি চা-ধূমপানের বিরতি নেওয়ার সময় সহকর্মীদের সঙ্গে কী নিয়ে আলোচনা করি তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে দেন বস্। এই বার্তালাপের ভিডিয়োও তোলেন তিনি। কিন্তু আমি ভিডিয়ো করতে চাইলে বস্ বলেন, ‘এখনও তোমার অতিচালাকি গেল না।’’’ তরুণ জানিয়েছেন, তিনি শ্রম কমিশনের কাছে সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এখনও কোনও উত্তর পাননি। জবাবের অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তরুণ।