অবতরণের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টরন্টো বিমানবন্দরে আছড়ে পড়ে যাত্রিবাহী বিমান। আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উল্টেও যায়। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। ভয় ধরানো ভিডিয়োটিকে কেন্দ্র করে হইচই পড়েছে। সেই আবহে দুর্ঘটনার আরও একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, কী ভাবে উল্টে যাওয়া বিমান থেকে একে একে বেরিয়ে আসছেন আহত যাত্রীরা। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
আরও পড়ুন:
ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উল্টে পড়ে রয়েছে বিমানটি। ভাঙা বিমান থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে গলগল করে। উদ্ধারকর্মীরা বিমানের আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। এমন সময় এক দল যাত্রীকে বিমানের ভিতর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তাঁদের চোখেমুখে আতঙ্ক। ভয় পেয়ে প্রাণ বাঁচাতে ছুটতে শুরু করেন তাঁরা। ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেছেন নেলসন নামে এক যাত্রী। সেই ভিডিয়োই প্রকাশ্যে এসেছে।
বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই সে সংক্রান্ত ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে শেয়ার করতে শুরু করেছেন বিমানে থাকা যাত্রীরা। তাঁদেরই এক জন নেলসন। বিমান থেকে কোনও ক্রমে বেরিয়ে বরফে শুয়ে পড়েন তিনি। শুয়ে শুয়েই ক্যামেরাবন্দি করেন দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি। ভিডিয়োয় হাঁপাতে হাঁপাতে নেলসনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ডেল্টা থেকে টরন্টো। আমরা সবেমাত্র অবতরণ করেছি। আমাদের বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। একেবারে উল্টে গিয়েছে।’’ তিনি সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, ‘‘আশ্চর্যজনক যে আমরা এখনও বেঁচে রয়েছি। বিমানটি যখন আছড়ে পড়ে, ভেবেছিলাম বাঁচব না। বিমানটি ধাক্কা খাওয়ার পরেই উল্টে যায়। হইচই পড়ে যায়। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। এখনও আমি বিমানের জ্বালানির গন্ধ পাচ্ছি।’’ দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির একদম সামনের দিকে বসেছিলেন নেলসন। দুর্ঘটনার পর বিমানের বাঁ দিক থেকে তিনি একটি বড় আগুনের গোলা বেরিয়ে আসতে দেখেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
অন্য এক যাত্রী পিট কুকভের কথায়, ‘‘দুর্ঘটনার পর বিমান উল্টে যাওয়ায় আমরা বাদুড়ের মতো ঝুলে যাই। আমাদের মাথা নীচে এবং পা উপরে ছিল।’’
স্থানীয় সময় অনুযায়ী ঘটনাটি সোমবার মধ্যরাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। আমেরিকার মিনিয়াপোলিসের সেন্ট পল্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল বিমানটি। অবতরণের কথা ছিল টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কিন্তু অবতরণের আগে তুষারঝড়ের কারণে বরফে ঢেকে যায় সেই বিমানবন্দর। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেখানেই আছড়ে পড়ে বিমানটি। চারদিক কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উদ্ধারকর্মীরা। বিমান কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে, বিমানের মধ্যে ৭৬ জন যাত্রী এবং চার জন ক্রু সদস্য ছিলেন। তাঁদের সকলকেই উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় মৃত্যুর কোনও খবর নেই। ১৮ জন যাত্রী বিমান দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছে এক শিশুও। সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
টরেন্টোর দমকল বিভাগের প্রধান টড আইটকেনের দাবি, শুধুমাত্র আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে এমন না-ও হতে পারে। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।