নদিয়ার শান্তিপুরের বাগআঁচড়া হাই স্কুলের ছাত্রী ঝুমা মল্লিক। কিছুই মনে থাকে না আজকাল, স্নায়বিক প্রতিবন্ধকতার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতিশক্তি। বোন রুমা-ও একই স্কুলে পড়ে। হুইলচেয়ারবন্দি জীবনে আরও অনেক বাধা। ছোট থেকেই কানে শোনে না রুমা, বলতে পারে না কথাও। শুধু শারীরিক সমস্যাই নয়, দিনমজুর বাবার সংসারে দারিদ্রের সঙ্গে রোজের যুদ্ধ। মাঝপথেই থেমে গিয়েছে ঝুমার চিকিৎসা। ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়া টিনের চাল আর পাটকাঠির ঘরে পাঁচ জনের ঠাঁই । কোনও প্রতিবন্ধকতাই আটকাতে পারেনি দুই মেয়েকে। এ বারের মাধ্যমিকে ‘রাইটারে’র সাহায্য নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে সাফল্য এসেছে। রুমার প্রাপ্তি ৩২৪, আর দিদি ঝুমার মার্কশিটে ৩২১।
দিনমজুর বাবার আফসোস মেয়েদের বিশেষ ভাবে সক্ষম পড়ুয়াদের স্কুলে পড়াতে পারেননি। টিউশনে ভর্তি করারও সামর্থ ছিল না। যমজ বোনের লড়াইয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল শান্তিপুরের একটি অসরকারি সংগঠন। মাধ্যমিকের জন্য ‘রাইটার’ও জোগাড় করে দিয়েছিলেন তারাই।
নিজেরা বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য তৈরি স্কুলে যেতে পারেননি। পাননি তাদের বিশেষ চাহিদার উপযুক্ত শিক্ষাসামগ্রীও। ঝুমা জানাচ্ছে, তাদের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে শুধু অনুমান করে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশই অনুধাবন করতে পেরেছে তারা। নিজেরা যা পাননি, অন্যদের জন্য তা সুনিশ্চিত করাই এখন লক্ষ্য রুমার। জীবন আটকে রয়েছে হুইলচেয়ারের ঘেরাটোপে, তা বলে কি স্বপ্নের উড়ান দেবে না সাহসী কন্যা? দিদিকে নিয়ে গড়ে তুলবে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের স্কুল, সে জন্যই নিজেকে তৈরি করছে রুমা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy