Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
River Pollution

হারিয়ে যাওয়া জোয়ারভাটার শহর— আদি গঙ্গার গল্প

এক সময় আদি গঙ্গাই ছিল হুগলি নদীর মূল ধারা। তার পর ধীরে ধীরে নগরসভ্যতার দূষণের চাপে মজে নালায় রূপান্তর। আনন্দবাজার অনলাইনে পরিবেশবিদের সঙ্গে আদি গঙ্গা পরিক্রমা।

প্রতিবেদন ও চিত্রগ্রহণ: সুব্রত ও প্রিয়ঙ্কর, সম্পাদনা: সুব্রত

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ১৭:৪২
Share: Save:

সপ্তদশ শতক পর্যন্ত এটাই ছিল হুগলি নদীর মূল ধারা। কালীঘাট, বারুইপুর, মগরা হয়ে সাগরে মিশত আদি গঙ্গা। মঙ্গলকাব্যের নদীর তীর তখন সরগরম বাণিজ্যতরীর যাওয়াআসায়। নদীর পারে বেড়ে ওঠে সভ্যতা— গোবিন্দপুর। প্রাকৃতিক কারণেই গতিপথ বদলায় হুগলি, আদি গঙ্গা শীর্ণকায় চেহারা নিয়ে পড়ে থাকে তার ফেলে আসা যৌবনের স্মৃতির জলছবি হয়ে। অতঃপর সাহেব কলোনি নির্মাণ, ১৭৭২ থেকে ১৭৭৭-এর মধ্যে মজে আসা আদি গঙ্গার খিদিরপুর থেকে গড়িয়া পর্যন্ত অংশের সংস্কার করলেন টলি সাহেব। নতুন নাম পেল নদী— টালির নালা। তখনও বেশ চওড়া খালই ছিল আদি গঙ্গা। স্থানীয়দের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে সে দিনের জোয়ারভাটা-বন্যায় নিয়ন্ত্রিত শহুরে জীবন। জলের সঙ্গে মাটির সহাবস্থান। এমনকি ৭০-৮০-র দশকেও। কিন্তু সভ্যতার ঠেলায় ধীরে ধীরে মরে আসছিল জলধারা। কবে যেন নোংরা, সরু নালায় পরিণত হল নদী। আদি গঙ্গা বেঁচে রইল শুধু লোককথায় আর পুরনো বাসিন্দাদের স্মৃতিতেই।

পরিবেশ আদালতে বার বার মামলা হয়েছে আদি গঙ্গার দূষণ নিয়ে। রায়ও বেরিয়েছে। সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। আদি গঙ্গার ধারে ধারে অনেক জায়গায় আবর্জনা ফেলতে নিষেধ করে পৌরসভা নোটিস দিয়েছে। কামালগাজি থেকে নদীর স্বাস্থ্য কিছুটা ভাল হলেও, মূল কলকাতার মধ্যে জলের রং আরও কালো হয়েছে। সম্প্রতি সিলেটে অনুষ্ঠিত নদী ও জলসম্পদ বিষয়ক এক অধিবেশনে এক গবেষক দাবি করেছেন, রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রক পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী আদি গঙ্গার প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে প্রায় ১.৭ কোটি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্য। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, আদি গঙ্গায় মিশেছে অন্তত ৫৭টি শহরের বর্জ্য বহনকারী নালা। ২০০৯ সালে মেট্রোরেল সম্প্রসারণের জন্য ৩০০টি স্তম্ভ পোঁতা হয়েছে নদীর বুকে। সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালত পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদি গঙ্গার সংস্কারের কাজ শেষ করতে। দ্য ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা ‘মরা নদীর সোঁতা’র পুনরুজ্জীবনের জন্য ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।

আদি গঙ্গার স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার কতটা সম্ভব? কী ভাবে জলের ছন্দ রোখার আয়োজন চলছে? হারিয়ে যাওয়া নদীর খোঁজে কলকাতা থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, আদি গঙ্গা পরিক্রমায় বেরিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন, সঙ্গে পরিবেশবিদ জয়া মিত্র আর নদী বিশেষজ্ঞ তাপস দাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy