Advertisement
১৩ জুলাই ২০২৫

সেনা, রেলের পর ভারতে সব থেকে বেশি সম্পত্তির মালিক! ওয়াকফে বদলের পথে বিজেপি

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ওয়াকফ হল ধর্মীয় এবং দান করা সম্পত্তি। একবার ওয়াকফের জমি ঘোষণা হলেই সেই সম্পত্তি আল্লাহ্‌র নামে হয়ে যায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৪১
Share: Save:

১৩ ঘণ্টা বিতর্কের পর লোকসভায় পাশ ওয়াকফ সংশোধনী বিল দু হাজার পঁচিশ। বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৮৮। বিপক্ষে মত দিয়েছেন সংসদের ২৩২ জন সভ্য। বিজেপি তো বটেই, বিলের পক্ষে মত দিয়েছে এনডিএ শরিক নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল, চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি এবং চিরাগ পাসওয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি। সংশোধনীর বিপক্ষে কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, শরদ পওয়ারের এনসিপি, ডিএমকে, আরজেডি এবং উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা।

ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তির পরিমাণ ৯ দশমিক ৪ লক্ষ একর। যার ৮ দশমিক ৭ লক্ষ একর নিয়ন্ত্রণ করে ওয়াকফ বোর্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যার বাজারমূল্য কম করে ১ লক্ষ কোটি টাকা। দেশে জমির মালিকানার নিরিখে ভারতীয় সেনা এবং রেলের পরই রয়েছে ওয়াকফ বোর্ড। গোটা বিশ্বে আর কোথাও এমন নজির নেই। সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ওয়াকফ বোর্ডের বছরে আয় ১২,০০০ কোটি।

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ওয়াকফ হল ধর্মীয় এবং দান করা সম্পত্তি। একবার ওয়াকফের জমি ঘোষণা হলেই সেই সম্পত্তি আল্লাহ্‌র নামে হয়ে যায়। তার মালিকানা আর কোনও দিনই পরিবর্তন করা যায় না। অমিত শাহের দফতর ২০২৪ সালে সংসদকে জানায়, ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে ৪০ হাজার ৯৫১টি মামলা এখনও অমীমাংসিত। মামলা চলছে ওয়াকফ ট্রাইবুনালে। যার মধ্যে ৯,৯৪২টি মামলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই ওয়াকফ পরিচালনার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর ৬টি গ্রাম এবং দেড় হাজার বছরের পরনো একটি মন্দিরকেও ওয়াকফ সম্পত্তি বলে দাবি করা হয়।

১৯৯৫ সালের আইন অনুযায়ী ওয়াকফ বোর্ডের হাতে যে সর্বোচ্চ ক্ষমতা সেখানে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আনতেই নতুন সংশোধনী। এনডিএ সরকার দেশের ওয়াকফ বোর্ডের পরিচালনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চায়। বোর্ড প্রধানের একাধিপত্যে হ্রাস টানতেও চায়। ওয়াকফ প্রধান মুতাওয়াল্লির সঙ্গে কমিটিতে অ-মুসলিম ব্যক্তি এবং মহিলাদের অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাব রেখেছে কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রক। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, কোনও জমি ওয়াকফ বোর্ডের কিনা, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হোক জেলা কালেক্টরকে। পুরনো আইনের ৪০ নম্বর ধারায় সম্পত্তি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়াকফ বোর্ডের হাতেই সর্বোচ্চ ক্ষমতা। এ বার তা বদল করে জমিসংক্রান্ত বিবাদে ৯০ দিনের মধ্যে হাই কোর্টে যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে।

১৯৫৪ সালে প্রথম বার সংসদে পাস হয় ওয়াকফ বিল। ১৯৫৫ সালে তা আইনি রূপ পায়। ২০১৩ সালে ইউপিএ আমলে আইনে সংশোধনী এনে যে কারও সম্পত্তি নিজের করে নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয় ওয়াকফ বোর্ডকে। কোনও সম্পত্তি যদি মুসলমানের হয়, ওয়াকফ চাইলেই তার মালিক হতে পারবে। এ ক্ষেত্রে শুধু ‘চাওয়াটাই’ অগ্রাধিকার পাবে। ভারতে একমাত্র ইসলামী প্রতিষ্ঠান ওয়াকফ এই অধিকার পায়। হিন্দু, খ্রিস্টান বা শিখদের জন্য এমন কোনও আইন ভারতে নেই। এমনকি বিশ্বের অন্যত্র, যেমন— তুরস্ক, লিবিয়া, জর্ডন, তিউনিশিয়া কিংবা ইজিপ্টের মতো ইসলাম প্রধান দেশেও কোনও ওয়াকফ বোর্ড নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy