সম্পাদনা: বিজন
হ্যারিস শিল্ডে ৪৩৯ রানের রেকর্ড করার পর দশ বছর তিন মাস এবং দশ দিনের অপেক্ষা। অবশেষে ‘সুযোগ’। ৪৮ বলে ৫০*। আবারও রেকর্ড। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচেই সব থেকে দ্রুত অর্ধশতরানের নজিরে যুগ্ম দ্বিতীয় স্থান দখল। বছর ছাব্বিশের নওজওয়ান তখন ৬৬ বলে অপরাজিত ৬২। ‘অভিষেকে শতরান’, এই শৃঙ্গজয়ের লক্ষে যখন এক পা দু’পা করে এগোচ্ছেন, তখনই হঠাৎ অঘটন। হতে হল রবীন্দ্র জাদেজার ‘শিকার’। ঠিক যে ভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে এক ভুলে দেড়শো কোটির হৃদয়ভঙ্গ করেছিলেন, হার্দিকের সেই রান আউটের থেকেও হৃদয় বিদারক ছিল রাজকোটের প্রথম দিনের খেলার ৮১.৫ ওভারের এই অনভিপ্রেত উইকেট। এক দশকের অপেক্ষার পর যখন ‘সুযোগ’ সদয় হল, তখন মুখ ফেরাল ‘ভাগ্য’। আউট সরফরাজ় খান।
ক্রিকেট মানচিত্রে যে প্রতিযোগিতা সচিন তেন্ডুলকর, বিনোদ কাম্বলিদের প্রথম পরিচিতি দিয়েছিল সেই হ্যারিস শিল্ডে ৪৩৯ রানের রেকর্ড। সরফরাজ়ের শিরোনামে আসা সেই প্রথম। পৈতৃক নিবাস উত্তর প্রদেশের আজমগড়ে হলেও সরফরাজ়ের জন্ম মুম্বইয়ে। বাবা নওশাদ খান লোকাল ট্রেনে শসা আর প্যান্ট বিক্রি করতেন। বাসস্থান বলতে ‘বস্তি’ই ছিল সহায়-সম্বল। এক সাক্ষাৎকারে নওশাদ খান নিজে বলেছেন, এমন জায়গায় থাকতে হয়েছে যেখানে বাথরুমে যাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হত। লড়াইটা এখান থেকেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪৫ ম্যাচে ৪ হাজারের কাছাকাছি রান। গড় প্রায় ৭০। তারপরও সুযোগ থেকে বঞ্চিত! হতাশা থেকেই একবার সরফরাজ় তাঁর বাবাকে বলেছিলেন, “শূন্য থেকেই শুরু করেছি, আমাদের হারানোর কিছু নেই। দেশের হয়ে খেলতে না পারলে বিশেষ কী আর হবে আব্বু? আমরা আবারও প্যান্ট বিক্রি করব।”
১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম বার ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ এসেছে। ৩১১ নম্বর ক্যাপ সরফরাজ়ের হাতে তুলে দিয়েছেন অনিল কুম্বলে। প্যাড পরে ৪ ঘণ্টা বসে থাকার পর যখন ব্যাট করার সুযোগ আসে, তখনই খেল দেখিয়ে দিয়েছেন সরফরাজ়। “রাত কো ওয়াক্ত দো গুজ়রনে কে লিয়ে/ সুরজ আপনে হি সময় পে নিকলেগা”— সত্যি হয়েছে নওশাদ খানের স্বপ্নই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy