উত্তরবঙ্গের ছবির মতো সাজানো ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম তানইয়ং। ছবি: সংগৃহীত।
যে দিক চোখ যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। ঝকঝকে রোদে কুয়াশা কেটে গেলে, দেখা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। দিনভর গাছের মাথায় পাখিদের আনাগোনা। আকাশছোঁয়া পাইন বন। আর যখন বিকেল নামে, তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভুলে যাওয়া যায় সমস্ত দুঃখ-কষ্ট।
এমন নিরালা-নিভৃতে হারিয়ে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার বাসনা থাকলে আসতে পারেন তানইয়ং। গ্রামটি যেমন সুন্দর, নামটিও তাই। কালিম্পঙের অজানা গ্রামটির খোঁজ জানেন না এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি।
তবে যদি পাহাড়ের বুকে দু’দণ্ড জিরিয়ে নেওয়া, আর প্রকৃতির রূপ আস্বাদনই বেড়ানোর লক্ষ্য হয়, তবে এই গ্রাম হতে পারে সঠিক নির্বাচন। বর্ষায় তানইয়ং একরকম। কিঞ্চিৎ গুরুগম্ভীর। মেঘ-আাকাশের চাদরে তখন ঢাকা থাকে পাহাড়।
তবে মরসুম বদলালে দৃশ্যপট বদলায় তানইয়ংয়ের। শরতের মেঘ আকাশে ভাসলে সবুজ পাহাড় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মেঘ সরলে উঁকি দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সেই রূপের আলাদাই মাদকতা। সকালের সূর্যোদয়ে আকাশে লাগে আগুন রং। পড়ন্ত বিকেলে আকাশে থাকে লালের আভা। শান্ত পাহাড়ি গ্রামে বসে সে সৌন্দর্য উপভোগ করলে, মনে হতে পারে, সত্যিই জীবন এত মধুর!
কালিম্পংয়ের সামালবংয়ের অন্তর্গত ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম তানইয়ং। পুজোয় যদি উত্তরবঙ্গের টিকিট কাটা থাকে আর ঘোরার জায়গা না ঠিক করে থাকেন, তবে বেছে নিতে পারেন এই গ্রাম। অক্টোবরের শেষে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনের সুযোগ থাকে বেশি। এই সময় ঝকঝকে আকাশের সান্নিধ্য পাওয়া যায়।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে তানইয়ংয়ের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। কালিম্পং থেকে দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। যদি প্রশ্ন থাকে, এই গ্রামে কী দেখা যায়, তা হলে উত্তর হবে একটাই— প্রকৃতি। দু’চোখ ভরে যদি পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, যদি শহুরে ক্লান্ত জীবন থেকে পাকাপাকি দু’দিনের ছুটি চান, তবে বেছে নিতে পারেন তানইয়ংয়ের নির্জনতা। প্রিয় মানুষটির হাত ধরে ঘুরে নিতে পারেন পাহাড়ি গ্রাম। সাক্ষী হতে পারেন এখানকার মানুষের অকৃত্রিম সরল জীবনযাত্রার।
যদি বয়স্ক মানুষদের নিয়ে এসে কেউ পাহাড়ের কোলে ভালমন্দ খেয়ে, প্রকৃতির দিনভরের রূপবদল দেখতে চান, তবে এই জায়গা হবে একদম সঠিক।
আর কোথায় ঘোরা যায়?
পানবু, লামাদারা, সামথার হয়েই তানইয়ং আসতে হয়। কাছেই রয়েছে কালিম্পং। তাই দু’দিন তানইয়ং-এ থাকার জন্য রেখে, যাওয়া বা আসার পথে কালিম্পং ঘুরে নিতে পারেন।পানবু, সামথারও খুব সুন্দর জায়গা। চাইলে সেখানেও এক বা দু’রাত কাটাতে পারেন। তবে এখানে যদি নির্দিষ্ট ট্যুরিস্ট স্পট খোঁজেন তবে হতাশ হতে হবে।
থাকার জায়গা
তানইয়ঙে পাহাড়ের মাথায় কাঠের সুন্দর একটি হোম স্টে রয়েছে। যেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা মেলে। হোম স্টে-তে থেকেই এই জায়গা উপভোগ করতে হবে। খাবার ব্যবস্থাও সেখানে।
কী ভাবে আসবেন?
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে তানইয়ং আসতে পারেন। আবার কালিম্পং থেকেও আসতে পারেন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে আসতে ৪ ঘণ্টার উপর সময় লাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy