Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Puja 2024 Special

শহর ছাড়িয়ে কোথাও যেতে চান? চারচাকাকে সঙ্গী করে ঘুরে নিন আঁটপুর

পুজো মানেই ছুটি, হুল্লোড়, সকলে মিলে বেড়াতে যাওয়া। কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে গিয়ে সে দিনই ফিরে আসবেন? আনন্দবাজার অনলাইনে রইল এমনই কয়েকটি চেনা-অচেনা ঠিকানা।

কলকাতা থেকে একদিনেই ঘুরে নেওয়া যায়। যাবেন না কি বিবেকানন্দ স্মৃতি-বিজড়িত আঁটপুরে?

কলকাতা থেকে একদিনেই ঘুরে নেওয়া যায়। যাবেন না কি বিবেকানন্দ স্মৃতি-বিজড়িত আঁটপুরে? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৪২
Share: Save:

পুজোর কলকাতা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চান? এক দিনে ঘুরে আসতে চান এমন কোনও স্থানে, যেখানে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করা যায়? তা হলে বরং চলুন আঁটপুর।

হুগলির এই স্থানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু স্মৃতি। এই সেই গ্রাম, যেখানে ধুনি জ্বেলে শ্রীরামকৃষ্ণের নয় শিষ্য নরেন্দ্র, বাবুরাম, শরৎ, শশী, তারক, কালী, নিরঞ্জন, গঙ্গাধর এবং সারদা সঙ্কল্প করেছিলেন সংসার ত্যাগের। মানবকল্যাণে ব্রতী হওয়ার। সেই স্মৃতিচিহ্নবাহী ধুনি মণ্ডপের গায়ে স্বামী বিবেকানন্দ-সহ ন’জন সন্ন্যাসীর মূর্তি খোদাই করা রয়েছে।

আসলে এই জনপদে ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র মন্দির। তার অনেকগুলি বেশ পুরনো। তার মধ্যে রয়েছে টেরাকোটার অপূর্ব কারুকাজ। এখানেই রয়েছে রাধাগোবিন্দ মন্দির। চমৎকার তার কারুকাজ। ১৭৮৬-৮৭ সালে বর্ধমান রাজার দেওয়ান কৃষ্ণরাম মিত্র গঙ্গাজল, গঙ্গামাটি আর পোড়ামাটির ১০০ ফুট উচ্চতার রাধাগোবিন্দ মন্দির নির্মাণ করেন। চার খিলানের স্তম্ভ, টেরাকোটার কাজের দেওয়ালজোড়া অসংখ্য প্যানেলে পৌরাণিক ও সামাজিক চিত্রকথার অপরূপ আখ্যান দেখার মতো। মন্দিরের প্রথম দালানের অন্দরে দেওয়াল ও সিলিংয়ের টেরাকোটার অলঙ্করণ মনোমুগ্ধকর। মন্দিরের সামনে অষ্টকোণাকৃতি রাসমঞ্চ, গম্বুজ আকৃতির দোলমঞ্চ। রাস্তার অন্য পাড়ে দিঘি। এ ছাড়া, চণ্ডীমণ্ডপ, কাঠের ফ্রেমে বাঁধানো রাধাকৃষ্ণের যুগলমূর্তি অসাধারণ। কাছেই জলেশ্বর, রামেশ্বর, বানেশ্বর ও ফুলেশ্বর মন্দির বিখ্যাত। এগুলি সবই শিবমন্দির। মন্দিরগুলির বয়স আড়াইশো বছরের কাছাকাছি।

আঁটপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দির।

আঁটপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দির। ছবি: সংগৃহীত।

আঁটপুরেই রয়েছে ৩০০ বছরের পুরনো কাঁঠাল কাঠের চণ্ডীমণ্ডপ। কাঠের উপর রাধাকৃষ্ণের যুগলমূর্তি, মানুষ এবং জীবজন্তুর নানা ছবি দৃশ্যমান। এই গ্রামের আনাচ-কানাচে রয়েছে অসংখ্য মন্দির। বয়সেও তারা বেশ পুরনো।

এখানে এলে অবশ্যই ঘুরে নেবেন ‘প্রেমানন্দ ভবন’। বাবুরাম ঘোষের বসতবাড়ি এলাকা। ১৮৮৬ সালে যে ন’জন সংসার ত্যাগের সঙ্কল্প করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাবুরাম ঘোষ। বাড়িটি জীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে রামকৃষ্ণ মঠের উদ্যোগে সেটি সংস্কার করানো হয়। প্রেমানন্দ ভবনে রামকৃষ্ণ মঠের পরিচালনায় প্রতি বছর নিয়ম মেনে দুর্গাপুজো হয়। পুজোর সময় আঁটপুর বেড়াতে এলে গ্রামের এই দুর্গাপুজোও উপভোগ করতে পারবেন।

আঁটপুর থেকে ৬ কিমি দূরে রাজবলহাটের মৃন্ময়ীদেবী রাজবল্লভীর সুন্দর মন্দিরটি দেখে নিতে পারেন।

এই আঁটপুরেই কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মভিটে।

যেতে কতক্ষণ সময় লাগবে?

কলকাতা থেকে আঁটপুরের দূরত্ব ৫২ কিলোমিটারের কাছাকাছি। যেতে আড়াই ঘণ্টা থেকে ৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে ডানকুনি, চণ্ডীতলা হয়ে শিয়াখালা, গজারমোড় পার করে যেতে হবে আঁটপুর। হাওড়া, ডোমজুড়, জগৎবল্লভপুর, জাঙ্গিপাড়া হয়েও আঁটপুর যাওয়া যায়।

যাওয়ার পথেই রাস্তার দু’ধারে মাঝেমধ্যে দেখা দেবে সাদা কাশফুল।

কোথায় থাকবেন?

আগে থেকে অনুমতি নিয়ে গেলে আঁটপুর রামকৃষ্ণ মঠের অতিথি নিবাসে রাত্রিবাস করতে পারেন। রাজবলহাটেও রয়েছে যাত্রীনিবাস।

আর কী দেখবেন?

আঁটপুরের তাঁতের শাড়িও জনপ্রিয়। গ্রামে গেলে তাঁতিদের বাড়ি ঘুরে নিতে পারবেন। কী ভাবে তাঁত বোনা হয়, চাক্ষুষ করতে পারবেন। আর দেখতে পাবেন গ্রাম বাংলার রূপ।

অন্য বিষয়গুলি:

Antpur Travel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy