‘সাত ভাই চম্পা’র পরিবর্তে খাসি পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে এসেছে ‘সাত বোন’। ছবি: সংগৃহীত
সকাল থেকে ছিটেফোঁটাও বৃষ্টির দেখা নেই। কিন্তু কাজে বেরোনোর ঠিক আগে এমন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল যে, রাস্তাঘাট একেবারে কাদা প্যাচপেচে হয়ে একাকার কাণ্ড। শহরের কোথাও কোথাও আবার একটু বৃষ্টি মানেই জল জমে রাস্তা আর নর্দমা একাকার অবস্থা। ঠিক এ কারণেই বর্ষাকাল পছন্দ করেন না অনেকে। নোংরা জল পেরিয়ে বাইরে যেতেই কেমন যেন গা ঘিনঘিন করে। বৃষ্টির আসল মজাটাই উবে যায় শহরে থাকলে। আচ্ছা এমন কোথাও কি যাওয়া যায়, যেখানে বৃষ্টি হবে অথচ জল দাঁড়াবে না? বর্ষার ঘন কালো মেঘ দেখে রাস্তার পাশে জমা জল-কাদার কথা মনে পড়বে না?
১) চেরাপুঞ্জি
মেঘালয় রাজ্যের ছোট্ট শহর হল চেরাপুঞ্জি। একটা সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হত এই চেরাপুঞ্জিতেই। তবে এখন সেই খ্যাতি কেড়ে নিয়েছে মৌসিনরাম। প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্য এবং মেঘ, বৃষ্টির খেলা দেখতে দেখতে সময় কেটে যাবে অনায়াসে। গুহা, লেক, পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা ঝর্না— কী নেই চেরাপুঞ্জিতে? রাস্তা দিয়ে যেতে যেতেই চোখে পড়তে পারে ‘সেভেন সিস্টার্স ফল্স’। এখানে এলে একবার ঘুরে দেখতেই হবে ডউকি লেক। বিশ্বের সবচেয়ে স্বচ্ছ জলের নদী এই ডউকি। এই লেকের জল এতটাই স্বচ্ছ যে নৌকার ছায়া দেখা যায় জলের গভীর পর্যন্ত। নৌকাবিহার করতে করতেই দেখা যায় জলের তলায় মাছেদের আনাগোনা। প্লাস্টিক, আবর্জনাহীন এই জায়গা দেখলে মনে হবে যেন রূপকথার গল্পে বর্ণিত। এ ছাড়াও ঘুরে দেখতে পারেন লিভিং রুট ব্রিজ এবং এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম মওলিনলং।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে ট্রেনে বা বিমানে গুয়াহাটি কিংবা শিলং পৌঁছনো যায়। শিলং থেকে গাড়িতে চেরাপুঞ্জি যেতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টার মতো। পাহাড়ের গা বেয়ে তৈরি রাস্তা দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পৌঁছে যাওয়া যায় চেরাপুঞ্জি। থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে, তবে আগে থেকে থাকার জায়গা ঠিক করে রাখাই ভাল।
২) লোনাভালা
কলকাতা থেকে ট্রেনে কিংবা বিমানে মুম্বই অথবা পুণে থেকে গাড়িতে করে সোজা চলে আসা যায় লোনাভালা। প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য দেখে মন ভরে যাবে। বর্ষাকাল এই জায়াগায় ঘুরতে আসার জন্য একেবারে আদর্শ। মহারাষ্ট্রে এমন অনেক জায়গাই রয়েছে, তবে লোনাভালা এবং খন্ডালার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অন্য সব জায়গার চেয়ে আলাদা। পাহাড়ের গা বেয়ে বৃষ্টির জল ঝর্নার স্রোতের মতো বয়ে চলেছে। কাছেই রয়েছে লোনাভালা এবং ভুসি ড্যাম। এখান থেকেই হেঁটে চলে আসা যায় লায়ন্স পয়েন্টে। মেঘ, বৃষ্টির খেলা বন্ধ হলেই চোখের সামনে দেখতে পেতে পারেন নৈসর্গিক এক দৃশ্যের। হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন রেউডপার্ক থেকে। আর একটু এগোলেই রয়েছে খন্ডালা। এই জায়গাটিও ঘুরতে মন্দ লাগে না। বর্ষাকালে খন্ডালা জলপ্রপাতও হয়ে থাকে টইটম্বুর। পুণে শহরের থাকার অনেক জায়গা রয়েছে। তাই সেখান থেকে গাড়ি করে ঘুরে আসাই ভাল।
৩) কুন্নুর
তামিলনাড়ু সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল হল কুন্নুর। এখানকার শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশই পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কারণ। নীলগিরি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই ‘হিলস্টেশন’ রয়েছে দ্রুগ্স দুর্গ। যা পক্ষীপ্রেমীদের অত্যন্ত পছন্দের একটি জায়গা। রয়েছে ডলফিন নোজ় ভিউ পয়েন্ট, পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত ল্যাম্বস্ রক, প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো মরিয়ম্মান মন্দির, চা কারখানা, জলপ্রপাত। বেশির ভাগ পর্যটক কুন্নুর ঘুরতে আসার জন্য শীতকালটিকেই বেছে নেন। তবে বর্ষাতে এলেও কিন্তু প্রকৃতি আপনাকে হতাশ করবে না।
কী ভাবে যাবেন?
কলকাতা থেকে রেলপথ এবং আকাশপথে পৌঁছনো যায় কোয়েম্বত্তুর। সেখান থেকে উটি হয়ে কুন্নুরের দূরত্ব মাত্র ১২০ কিলোমিটার। এখানে থাকার খুব ভাল মানের হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy