এই নবাবনগরীতে আছে কত রকম দেখার জায়গা। নিজস্ব চিত্র।
শীতের ছুটিতে কোথায় যাবেন ভাবছেন? নতুন রিসর্ট, দর্শনীয় স্থান তো হচ্ছেই, তবে দেখে আসা যায় কোনও একটি ঐতিহাসিক জায়গাও। যেমন ধরা যাক মুর্শিদাবাদ। বঙ্গের ইতিহাস জানা হবে, আবার দু’দিন শহরের হট্টগোল থেকে দূরেও থাকা যাবে। এই নবাবনগরীতে আছে কত রকম দেখার জায়গা।
কী কী দেখবেন?
মুর্শিদাবাদের দ্রষ্টব্য স্থানগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল হাজারদুয়ারি। এই রাজপ্রাসাদটি স্থাপন করেছিলেন নবাব হুমায়ুনজা। তৈরি করতে প্রায় আট বছর (১৮২৯-১৮৩৭) সময় লাগে। মোট খরচ হয় ১৭ লক্ষ টাকা। এখানে ১০০০ দরজার মধ্যে ৯০০টি আসল ও ১০০টি নকল। এখানে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে নবাবদের ব্যবহার করা বহু জিনিস রয়েছে। বিভিন্ন ছবি, আসবাবপত্র ও যুদ্ধের অস্ত্রও রাখা আছে। খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। করোনার জন্য টিকিট কাটতে হচ্ছে অনলাইনে। টিকিটের মূল্য ২০ টাকা।
যাওয়া যায় মতিঝিলেও। মতিঝিল হল একটি প্রাসাদ এবং ঘোড়াকৃতি হ্রদের মিলিত সৌন্দর্য। নওয়াজেশ মহম্মদ এই সুন্দর ঘোড়াকৃতি হ্রদটি এখানে খনন করেছিলেন। প্রাসাদটি নষ্ট হয়ে গেলেও হ্রদটি এখনও রয়েছে। মতিঝিল পরে লর্ড ক্লাইভ, ওয়ারেন হেস্টিংস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ লর্ডদের বাসভবন হিসাবেও কাজ করেছে। ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে এটি জনপ্রিয় ভাবে ‘কোম্পানি বাঘ’ নামে পরিচিত হয়।
হাজার দুয়ারির সামনেই আছে ইমামবাড়া। এখানে অবশ্য প্রবেশের অধিকার নেই। বাইরে থেকেই দেখে নিতে হয়। আর এই দূরত্বের মধ্যেই আছে ঘড়ি বাড়ি ও কামান। জগৎ শেঠের বাড়ি। জগৎ শেঠ ছিলেন ইংরেজ আমলের শুরুর আগে বাংলা তথা ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ধনী ব্যাবসায়ী। এক সময়ে বাংলার নবাব তাঁর থেকে ধার নিতেন বিভিন্ন প্রয়োজনে। জগৎ শেঠ ছিল ওঁর উপাধি। ইনি মীরজাফরের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে সিরাজ দৌল্লাকে হারিয়ে বাংলার দখল বিদেশিদের হাতে যেতে সাহায্য করেছিলেন বলেই শোনা যায়। এই ষড়যন্ত্র হয়েছিল জগৎ শেঠের বাড়িতেই। বাড়িটি ঘুরে দেখতে পারেন। টিকিট ৪০-৫০ টাকা।
দেখে আসা যায় নবাব সিরাজের সমাধি। সিরাজের সমাধি না দেখলে মুর্শিদাবাদের মূল ইতিহাসই বাদ পড়ে যাবে। হাজার দুয়ারি বা অন্য সব কিছুই ইংরেজ আমলে তৈরি এবং প্রাক ইংরেজ যুগের। সিরাজের সমাধি খোশবাগে। গঙ্গার অপর পারে। নৌকা বা ভুটভুটি করে গঙ্গা পার করে একটু হেঁটে পৌঁছে যেতে পারেন এই জায়গায়। নৌকা ভাড়া ৪০-৫০ টাকা।
কী ভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ স্টেশন থেকে লোকাল, লালগোলা প্যাসেঞ্জার এবং এক্সপ্রেস ট্রেন করে মুর্শিদাবাদ যাওয়া যায়। বহরমপুর পর্যন্ত চলে যাওয়া যায় বাসে করেও। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ শহরে পৌঁছনোর জন্য একটি অটো বা গাড়ি ভাড়া করতে পারেন।
কোথায় থাকবেন?
হাজারদুয়ারিতে থাকার জন্য পর্যটন বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহরমপুর টুরিস্ট লজের পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি হোটেল রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy